২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:৫৮

জোরপূর্বক ঘুষ নেন ঢাবির সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক

ঢাবি   © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে ঘুষ গ্রহণ, ভুয়া ভাউচার বানিয়ে টাকা আদায়, নিম্নপদস্থ কর্মচারী নিয়োগে ঘুষ গ্রহণ, অধিভুক্ত শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন, কোনো কাজই টাকার বিনিময় ছাড়া করেন না ঢাবির সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তৈয়ব আলী। কথায় কথায় ঘুষ দাবি করেন তিনি। প্রয়োজনে জোরপূর্বক আদায় করেন তিনি। অনেকটা বাধ্যও করেন তিনি। প্রয়োজন বোধে নানান ধরনের হুমকিও দেন তিনি।

 এ ঘটনায় কলেজগুলো ঢাবি প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। এদিকে এসব ঘটনায় ঢাবি প্রশাসন তাকে কয়েক দফায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। তবে তা আমলে নেননি ঢাবির এ কর্মকর্তা। 

ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে জানিয়েছে, গত ২৭ জুন ঢাবি অধিভুক্ত পটুয়াখালীর গাজী মুনিবুর রহমান নার্সিং কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শনে যান তৈয়ব আলী। এ সময় কলেজের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা থেকে জোরপূর্বক কয়েক দফায় প্রায় ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন তিনি। যদিও ঢাবির কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা পরিদর্শককে বিশেষ সম্মানীর পাশাপাশি যাতায়াত ও খাওয়ার খরচ দেয়। এ ঘটনায় নার্সিং কলেজের পরিচালক ঢাবি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া বরিশালের ডিডব্লিউএফ নার্সিং কলেজের চেয়ারম্যান চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে একই অভিযোগ দিয়েছেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন তৈয়ব আলী। 

এদিকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ফারুক হোসেন থেকে চাকরি দেওয়ার নামে দামি মোবাইল কেনার টাকা দাবি করেন। এ ঘটনায় পরে তৈয়ব আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে ফারুক হোসেন জানান, ‘২০১৬ সাল থেকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ভালো দক্ষতা দেখানোর পাশাপাশি চাকরির পরীক্ষায় ভালো করায় বিশ্ববিদ্যালয় তাকে চাকরি দেয়। কিন্তু সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চাকরির জন্য তদবির করেছেন দাবি করে আমার কাছে দামি মোবাইল ফোন বাবদ চাঁদা দাবি করছেন।’

এসব বিষয়ে তৈয়ব আলী জানান, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি যেটাই করেছি তা উপাচার্যকে জানিয়েই করেছি।’

আরও পড়ুন : ইডেন কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি: অধ্যক্ষ

এ বিষয়ে ঢাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী জানান, ‘ওই কর্মকর্তা বিভিন্ন অধিভুক্ত কলেজ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন বলে কিছু লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। তাকে বিভিন্ন সময়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি যথোপযুক্ত জবাব দিতে পারেননি। বিষয়টি আমরা উপাচার্যকে জানিয়েছি।’

ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান জানান, ‘একজন সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট ফোরামে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।’