পরিত্যক্ত ৩ কোটি টাকার গাড়ি, মেরামতে আগ্রহ নেই জাবির
- মেহেদী মামুন
- প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:০৪ PM , আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:৫৬ PM
কোটি টাকা মূল্যের প্রায় নতুন দুটি পাজেরো জিপ আর তিনটি কার পাশাপাশি পার্কিং করা। প্রথম দেখাতে মনে হবে মাত্রই সারিবদ্ধ করা হয়েছে গাড়িগুলোকে। কিন্ত এগুলো গত ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত খোলা আকাশের নিচে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিসের অবহেলায় এরকম ১৫টি মেরাতমতযোগ্য ও বিক্রয়যোগ্য গাড়ী নষ্ট হচ্ছে। যেসব গাড়ির ক্রয়মূল্য ছিলো ৩ কোটি ৪০ লাখ। তবে পুরোনো গাড়ি ৫ বছর ধরে মেরামত ও বিক্রয়ে উদাসীন হলেও প্রশাসন নতুন গাড়ি ক্রয়ে অধিক মনোযোগী।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববদ্যালয়ের পরিবহন পুলে ৬টি বাস-মিনিবাস এবং ১৫টি কার, মাইক্রোবাস, জীপ ও অ্যাম্বুলেন্সগুলোতে অযত্ন অবহেলায় মরিচা পড়েছে।
পরিবহন অফিস সূত্রে জানা যায়, গাড়িগুলো ৮ থেকে ৪২ বছরের পুরাতন। তবে এগুলোর গড় বয়স ১৬ বছরের কম। গাড়িগুলোর মধ্যে বেশি ঝুকিঁতে আছে বেসিক ব্যাংকের দেওয়া উপহারের এসি মিনি বাস, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) এর পূর্বের ব্যবহৃত পাজেরো জিপ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও হেকেপের প্রকল্প শেষে পাওয়া ১টি পাজেরো জীপ ও ১টি কার। এসব গাড়ি পরিবহন পুলে যুক্ত হওয়ার পর থেকে মেরামত হয়নি। ফলে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকেই নষ্ট হচ্ছে গাড়িগুলো।
পরিবহন অফিসের কর্মকর্তারা জানান, ‘বাসগুলো ধীরে ধীরে মেরামতের অযোগ্য হচ্ছে এবং যেসব গাড়ি বিক্রয়যোগ্য সেগুলোর বাজারদর হ্রাস পাচ্ছে। যেমন ২০১০ ও ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দেওয়া ৬ টি বাসের পরিণতি হয়েছে। এসব বাস এখন ময়লার ভাগাড় আর মাদকের আসর হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে।’
জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৮ সালে নিলামে পরিত্যাক্ত গাড়ী বিক্রয় করা হয়েছে। সেসময় ৪টি গাড়ি বিক্রয় করার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলেও দুটি কার বিক্রি করা সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে মেরামত বা বিক্রয় না করা হলেও ইতোমধ্যে ৪টি নতুন বাস ক্রয় করা হয়েছে। যার মূল্য ১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। টিও এন্ড ই (টেবল অব ইকুয়েপমেন্ট এন্ড ইকুয়েপমেন্টস) প্রাধিকার না থাকা সত্ত্বেও বাস ক্রয় করায় ৬০ লক্ষ টাকা অনিয়মিত ব্যয়ের অভিযোগ করেছে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর।
এসব বিষয়ে বিশ্ববদ্যালয়ের পরিবহন অফিসের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক ছায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমার দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৩ মাস হয়েছে। পরিবহন অফিসে বেশকিছু জটিলতা ছিল যা কাটিয়ে উঠছে। ইতোমধ্যে গাড়ীগুলো পরীক্ষা করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেগুলো বিক্রয়যোগ্য সেগুলো বিক্রি করা হবে এবং মেরামতযোগ্য হলে মেরামত করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘ করোনাকালীন অনেক কাজ জমে ছিলো। যে কারণে অনেক কাজ করা হয়নি। আমরা মেরামতযোগ্য বাস মেরামত করা এবং পরিত্যাক্ত বাসগুলো বিক্রয় করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’