ভারমুক্ত হলেন জাবি উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম
নিয়োগের প্রায় সাত মাস পর ভারমুক্ত হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের নির্দেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-সচিব মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনর ইউনিভার্সিটি এ্যাক্ট ১৯৭৩ এর ১১ (১) ধারা অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. নূরুল আলমকে আগামী ৪ বছরের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জাবি উপাচার্য অধ্যাপক অধ্যাপক নূরুল আলম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এজন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারিরা যদি আমাকে সহযোগিতা করেন তাহলে এ যাত্রা আমার জন্য সহজ হবে।
তিনি বলেন, উপাচার্য নিয়োগের পত্রটি এখনো হাতে পাইনি। আজ বিকেলের মধ্যে চলে আসবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে, গত ১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়টির রুটিন উপাচার্যের দায়িত্ব পান অধ্যাপক নূরুল আলম। সেময় জানানো হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির পরবর্তী উপাচার্য নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনিক প্রয়োজনে অন্তর্বতীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলমকে নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত উপাচার্য দৈনন্দিন রুটিন দায়িত্ব প্রদান করা হলো।
অধ্যাপক নূরুল আলম ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কুশুরা আব্বাস আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৭৬ সালে তিনি স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৭৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৬ সালে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মজীবনে অধ্যাপক নূরুল আলম ১৯৮০ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮২ সালে তিনি একই বিভাগে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৬ সালে তিনি সহকারী অধ্যাপক, ১৯৯২ সালে সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৯৭ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
কর্মজীবনে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও অর্থ কমিটির সদস্য, গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ডিন, মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট, বিভাগীয় সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও সভাপতি এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও সভাপতি হিসেবেও নেতৃত্ব দিয়েছেন।
২০১২ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্যরা ৩ সদস্যের উপাচার্য প্যানেল নির্বাচিত করে। এ নির্বাচনে নূরুল আলম জয়ী হন এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। ২০১৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য নিযুক্ত হন। ২০২২ সালের ১ মার্চ তৎকালীন উপাচার্য ফারজানা ইসলামের মেয়াদ পূর্ণ হলে ২ মার্চ থেকে তিনি উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই বছরের ১৭ এপ্রিল তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সাময়িকভাবে নিয়োগ প্রদান করা হয় এবং একই দিন অপরাহ্নে তিনি উপাচার্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।