পচা খাবার খাওয়ানোর অভিযোগে ঢাবির সূর্যসেন হলে দোকান বন্ধ করলেন শিক্ষার্থীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাস্টার দা সূর্যসেন হলে পচা খাবার খাওয়ানোর অভিযোগে একটি খাবারের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দোকানটি তসলিমের দোকান নামে পরিচিত। শনিবার ( ১০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে নয়টায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, তসলিম নামের এক দোকানী নিয়মিত শিক্ষার্থীদের বাসি খাবার খাওয়ায়। মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী রুমে খাবার নিয়ে দেখতে পায় যে, খাবার থেকে উৎকট গন্ধ আসছে। পরে দোকানে এসে দোকান মালিকের সাথে বাক বিতণ্ডায় জড়ায় ওই শিক্ষার্থী। মুহুর্তেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। সংক্ষুব্ধ হয়ে খাবার পেলে দিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয় শিক্ষার্থীরা
সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী হৃদয় জানান, আজকে সন্ধ্যায় আমি খাবার নেওয়ার সময় হলের বাহিরের একজন লোক খাবার পচা বলে অভিযোগ করলে দোকানের কর্মচারী বলেন- এগুলো ফ্রেশ খাবার, একটু আগে রান্না করেছি এমন একটা মিথ্যা বুঝ দেন৷ কিন্তু তার পরক্ষণেই হলের আলম বাদশা নামক একজন শিক্ষার্থীও পচা খাবার দিয়েছে বলে অভিযোগ করে৷ তখন উপস্থিত ছাত্ররা খাবারটি আসলেই পচা বলে শনাক্ত করে৷ তারপর সেখানে একটি উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তারপর ছাত্ররা দোকানটি বন্ধ করে দেন এবং পচা খাবারগুলো ফেলে দেন৷
এছাড়াও ঐ হলের শিক্ষার্থী আজিজুল হক বলেন, তসলিম হলের একজন নিরাপত্তা কর্মী৷ হলের কর্মী হওয়ার পাশাপাশি তিনি হলেই একটি দোকানে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবসা করে আসছেন৷ বিভিন্ন সময়ে পচা খাবার খাওয়ানো খাবারের অতিরিক্ত দাম রাখার অভিযোগ উঠেছে তার দোকান আরও অনেকবার বন্ধ করা হয়েছিল৷ কিন্তু দুইএকদিন সব ঠিক থাকে তারপর আবার তাদের এই পচা খাবার ও খাবারের দাম বাড়ানোর কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি হয়৷ তিনি হল কর্মচারী হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের সাথে নানা সময়ে খারাপ ব্যবহার করে থাকেন৷ তার সাথে তার আত্মীয়স্বজন যারা দোকান চালায় তারাও একই রূপ আচরণ করেন৷ মনে হয় তসলিম যেন এই হলের মালিক আর আমরা ভাড়াটিয়া৷
এবিষয়ে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমান বলেন, হল দোকানের খাবারের মান উন্নয়নের জন্য হল ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছিল। কিন্তু কোনো পরিবর্তন আসেনি। আজ এক শিক্ষার্থীর খাবারে পচা মাংস দেয়া হয় তাই শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে দোকান বন্ধ করে দেয়। পরে হল প্রশাসন এসে দোকানটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। তসলিমের খারাপ ব্যবহারের কারণে বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্যও আমরা হল প্রশাসনকে জানিয়েছি। শীঘ্রই একটা ব্যবস্থা হবে বলে আশা করছি।
এবিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ প্রফেসর মকবুল হোসেন ভূইয়া বলেন, আমরা বিষয়টি দেখতেছি কীভাবে সমাধান করা যায়। হলের শিক্ষার্থীদের খাবারের মানের বিষয়টি মাথায় রেখে সমাধান করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৭ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিম উদ্দিন হলের ক্যান্টিনে পচা খাবার পরিবেশন করায় ক্যান্টিনে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে হল প্রশাসন ওই ক্যান্টিন মালিককে পরিবর্তন করে নতুন ম্যানেজার দিয়ে ক্যান্টিন চালাচ্ছেন।