১৬ জুন ২০২২, ০৮:৩৭

ভিসিদের সঙ্গে চুক্তি সই করতে দু’দিনের কক্সবাজার সফরে ইউজিসি

  © সংগৃহীত

দেশের ৫১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও রেজিস্ট্রারকে নিয়ে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) ৪ সদস্যসহ ২৫ জন। গতকাল বুধবার ২ দিনের এই সফর শুরু হয়। এই সফরে অন্তত ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এমন একটি সময়ে এই সফর হচ্ছে যখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকার রাষ্ট্রীয় ব্যয় কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।

সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, উৎকর্ষতা ও সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সই করতেই এই কক্সবাজার সফর।

প্রশ্ন উঠেছে, ঢাকার আগারগাঁওয়ে ইউজিসির কার্যালয়ে কি এই চুক্তি সই হতে পারতো না?

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ইউজিসির মতো একটি সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত সংস্থার চুক্তি সইয়ের নামে এই ধরনের বিলাসবহুল সফর ন্যাশনাল ইন্টিগ্রিটি স্ট্র্যাটেজি বহির্ভূত। তাদের দেখে অন্যরাও একই কাজ করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এই চুক্তি প্রায় বিনা খরচে ইউজিসি প্রাঙ্গণে অথবা ঢাকায় কোনো ভেন্যু ভাড়া নিয়ে করা যেত।

তবে, এই সফরের পক্ষেই নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিল অধ্যাপক আফরোজা বেগম। তিনি বলেন, ৫০ শতাংশ কম খরচ হওয়ায় আমরা কক্সবাজারে এই অনুষ্ঠানটি করছি। আমরা একটি নিরিবিলি জায়গা চাই। ভিসিদের সঙ্গে আমাদের সামনাসামনি কথা বলতে হয়। যখনই আমরা ঢাকায় অনুষ্ঠান করি, তখন অনেক মানুষ থাকেন। আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু সব সময় ফাঁস হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এখানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির একটি কর্মশালাও অনুষ্ঠিত হবে। ২ দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের জন্য ১৫ লাখ টাকার মতো খরচ হবে। এর আগে বগুড়া, কুমিল্লা ও বান্দরবানে এই অনুষ্ঠান করতে যে খরচ হয়েছে এবার তারচেয়ে ৫০ শতাংশ কম খরচ হবে।

ইউজিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে বগুড়া ও কুমিল্লায় এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছিল। খরচ হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে এটি বান্দরবানে অনুষ্ঠিত হয়, যার জন্য ইউজিসির খরচ হয় ২৫ লাখ টাকা।

এর আগে ঢাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চুক্তি সই হয়েছে বলে জানান ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইউজিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারী অধ্যাপক আবদুল মান্নান।

ইউজিসির সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, যখনই আপনি কক্সবাজারে একটি সেমিনার, কর্মশালা বা অন্য কোনো প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করেন, তখন সেখানে বিনোদনের একটা সংযোগ চলে আছে। এছাড়া, সব সদস্য ও শীর্ষ কর্মকর্তারা অফিস থেকে দূরে থাকাকালীন সময়ে কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।