অ্যাসাইনমেন্ট কুইজ ভাইভায় হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পরীক্ষা
করোনা ভাইরাসের কারণে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্কুল-কলেজ ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মহামারীর এই যাত্রায় পার পেয়ে গেলেও পরীক্ষা না হওয়ায় আটকে গেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ মেয়াদী সেশন জট এড়াতে তিনটি পদ্ধতিতে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তদারকি সংস্থা ইউজিসি।
ইউজিসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে কীভাবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা আয়োজন করবে তার একটি খসড়া নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে। এই নির্দেশনাগুলোর মধ্যে যে কোনো একটি অথবা একাধিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পরীক্ষা আয়োজন করতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
সূত্র আরও জানায়, পরীক্ষা আয়োজনের জন্য ইউজিসির একটি দল তিনটি নির্দেশিকা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সৃজনশীল অ্যাসাইনমেন্ট, সৃজনশীল কুইজ/এমসিকিউ পরীক্ষা অথবা মৌখিক পরীক্ষা। এই নির্দেশিকাগুলো চূড়ান্ত করতে আগামী বৃহস্পতিবার (৬ মে) ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সবকিছু চূড়ান্ত করা হবে।
ইউজিসির অনলাইনে পরীক্ষা সনংক্রান্ত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, গত বছরের ১৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হবার পর এখন পর্যন্ত দুটি সেমিস্টারের তাত্ত্বিক ক্লাস শেষ করেছে। তবে পরীক্ষা না হওয়ায় তাদের শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। এই অবস্থায় অনলাইনে পরীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় অবশ্যই শিক্ষার্থীদের মোবাইল/ল্যাপটপের ক্যামেরা এবং সাউন্ড অন থাকতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর মঙ্গলবার (৪ মে) সন্ধ্যায় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে আমরা কিছু নির্দেশিকা তৈরি করেছি। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে একাধিক নির্দেশিকা মেনে পরীক্ষা আয়োজন করতে পারে। এগুলোর আলোকে শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার গ্রেড দেয়া যাবে।
অনলাইনে পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপর নির্ভর করবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়টি তাদের একাডেমিক কাউন্সিল ঠিক করে। ফলে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া না নেয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ তাদের এখতিয়ার। আমরা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই এই উদ্যোগ নিয়েছি।
এদিকে অনলাইনে পাবলিক পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল বুধবার বৈঠক ডেকেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিনস কমিটি। এদিন বিকেল ৩টায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত আগামী বৃহস্পতিবার একাডেমিক কাউন্সিলে চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, আমরা এভাবে বসে থাকতে পারি না। এতে করে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। কাল আমাদের একটি বিশেষ বৈঠক আছে। সেখানে অনলাইনে পাবলিক পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিল ইউজিসি। ইউজিসির পরামর্শ মেনে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেয়া শুরু করেছিল। তবে হঠাৎ করেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বন্ধের নির্দেশনা দেয়।