প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়ছে বিদেশি শিক্ষার্থী, পাবলিকে উল্টো চিত্র
প্রতি বছর দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী বাড়ছে। তবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ চিত্র উল্টো। কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও কমছে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা। উচ্চশিক্ষা দেখভালের দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
গত ২৮ ডিসেম্বর প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে জমা দিয়েছে ইউজিসির একটি প্রতিনিধি দল। ২০১৯ সালের তথ্য নিয়ে করা ৪৬তম বার্ষিক প্রতিবেদনে উচ্চশিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ করা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে দেশের ১০৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪০টিতে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৯৪৯ জন। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৩৮৬ জন। আর ৪৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টিতে ৪৮২ জন বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল ৮০৪। সে তুলনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
ইউজিসির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৫ বছরের হিসাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সব বছর বিদেশি শিক্ষার্থী বেড়েছে। তার মধ্যে ২০১৫ সালে ১ হাজার ৫৪৮ জন, ২০১৬ সালে ১ হাজার ৯২৭ জন, ২০১৭ সালে ১ হাজার ৯৭৭ জন, তবে ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী সংখ্যা তুলনামূলক হারে কমে গিয়ে ১ হাজার ৩৮৬ হয়েছিল। অবশ্য পরে তা বেড়ে ১ হাজার ৯৪৯ জনে দাঁড়ায়।
অন্যদিকে, গত ৫ বছরের হিসাবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫ সালে ৫৯৩ জন, ২০১৬ সালে ৩৫৫ জন, ২০১৭ সালে ৪৬২, ২০১৮ সালে বেড়ে তা ৮০৪ জন ভর্তি হয়েছে। তবে এর পরের বছর ২০১৯ সালে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি প্রায় অর্ধেকে নেমে ৪৮২ জনে দাঁড়িয়েছে।
২০১৯ সালে বাংলাদেশের ৪০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশিরা স্নাতক-স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে পড়াশোনা করতে আসে। তার মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ফিলিপাইন, মিয়ানমার, জিম্বাবুয়ে, জাম্বিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, পাকিস্তান ও ভারতের শিক্ষার্থী রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট নিয়মিত আপডেট না রাখা, আবাসন সংকট, গতানুগতিক সিলেবাসসহ নানার কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীরা দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুবিধা ও পরিবেশ নিশ্চিত করায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশিরা আসতে আগ্রহী হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
এ প্রসঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম বলেন, যারা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীরা পড়তে আগ্রহী হচ্ছে। ২০১৬ সালে ঢাকায় হলি আর্টিসানের ঘটনার পর কিছুটা মুখ ফিরিয়ে নিলেও বর্তমানে সেই সংকট আর নেই।