পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার রোল ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বন্ধের আহবান ইউজিসির

  © লোগো

পেনশনসংবিধি তৈরি, মাস্টার রোল, চুক্তিভিত্তিক, দৈনিকভিত্তিক, সিকিউিরিটি গার্ড ও আনসার পদে নিয়োগ বন্ধে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি)। প্রয়োজনে ৪র্থ শ্রেণির পদের বিপরীতে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে নিয়োগ প্রদানের পরামর্শ দেন সংস্থাটি।

আজ রবিবার (১৮ অক্টোবর) ইউজিসি অডিটোরিয়ামে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বাজেট সংক্রান্ত দু’দিন ব্যাপী সভার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে সভপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের।

সভাপতির ভাষণে প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের করোনা সংকটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অপ্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় না করারও আহবান জানান। এছাড়া, নির্দিষ্ট খাতে ও কোডে ব্যয়ে নিয়ম, বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রতিপালন করার পরামর্শ দেন। তিনি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং একটি শক্তিশালী আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরনের আর্থিক অনিয়ম সহ্য করা হবে না। আর্থিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আজ রবিবার (১৮ অক্টোবর) ইউজিসি অডিটোরিয়ামে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের বাজেট সংক্রান্ত দু’দিন ব্যাপী সভার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ভার্চুয়াল মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ধরনের আর্থিক অনিয়ম সহ্য করা হবে না। আর্থিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বিদ্যমান আর্থিক নিয়মাবলী শতভাগ অনুসরণ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ইচ্ছেমতো আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে উপাচার্য যদি আর্থিক বিষয়ে আউট অব লাইন করে, আপনাদের (কোষাধ্যক্ষ এবং অর্থ হিসাব বিভাগের পরিচালক) দায়িত্ব প্রথমে বিষয়টি তাঁকে অবহিত করা। এরপরও উপাচার্য যদি কোন অনিয়ম করেন, তাহলে এর দায়ভার তাঁকেই (উপাচার্য) নিতে হবে। যদি বিশেষ প্রয়োজন হয় কিংবা কাজটি করার ক্ষেত্রে আপনাদের (কোষাধ্যক্ষ এবং অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক) ওপর চাপ থাকে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইনে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে ইউজিসি’র পরামর্শ ও অনুমোদন নিয়ে কাজটি সম্পাদন করতে পারেন।

বাজেট এবং আর্থিক বিষয় যেকোন প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রফেসর শহীদুল্লাহ বলেন, শুধু বাজেট তৈরি করলেই হবে না, বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। বাজেট বাস্তবায়নে এক খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ আরেক খাতে ব্যয় অগ্রহণযোগ্য। আর্থিক বিষয়ে পূর্ণ নিয়মের মধ্যে চলতে হবে। এ খাতে ঊনিশ-বিশ হওয়া যাবে না। প্রতিটি খাতের ব্যয় সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ইউজিসি’র প্রত্যাশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা চাই, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আরো স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও সম্পদের যথাযথ ব্যবহার সুনিশিচত করবে।

বাজেট বাস্তবায়নে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালককে শক্তিশালী ভ‚মিকা রাখার আহবান জানিয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, আপনাদের কাজ উপাচার্যের সামনে আর্থিক বিধি-বিধান, পে-স্কেল, অডিট আপত্তিসহ বাজেটের বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে ধরা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক স্বাধীনতা বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক স্বাধীনতা আর আর্থিক স্বাধীনতা এক নয়। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব আইন, নীতিমালা ও বিধি-বিধান রয়েছে। এগুলো পূর্ণমাত্রায় মেনে চলতে হবে। অর্থ হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। এখাতে শৃঙ্খলা না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় সুন্দরভাবে পরিচালনা করা যাবে না।

সভায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর ও প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন কমিশনের সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. ফেরদৌস জামান। এছাড়া, সভায় ইউজিসি’র বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালক ও বাজেট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সভায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মূল বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ