২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২০:০৩

বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা যেভাবে হবে

  © সংগৃহীত

বাংলাদেশে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তবে এখন পদ্ধতির পরীক্ষা কথা বলছে ইউজিসি। বুধবার বিকালে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ। এর আগে বেলা তিনটা থেকে ইউজিসি মিলনায়তনে এ সভা শুরু হয়।

গুচ্ছ পরীক্ষা কেমন হবে?

বুধবার দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে বৈঠকে বসেছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় কেন্দ্রীয় পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে চারটি গুচ্ছ পরীক্ষা নেয়ার।

ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, এটা হচ্ছে যেমন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সেগুলো একসাথে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। কৃষি, সাধারণ এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তারাও এরকম একসাথে নেবে। এইভাবে চারটি গুচ্ছ পরীক্ষা হবে। এই চারটা ভাগের মধ্যে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও সামাজিক বিজ্ঞান এগুলোর জন্য তিনটি পরীক্ষা হবে।

কেন সমন্বিত পরীক্ষা পদ্ধতি বাস্তবায়ন হলো না?

দেশের সকল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইতিমধ্যেই এই পদ্ধতিতে একসাথে পরীক্ষা নিয়েছে। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে এবং এই বছর থেকেই সেটি চালু হবে। কিন্তু শুরু থেকেই এই উদ্যোগ দেশের বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরোধিতার মুখে পরে।

প্রথমে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, তারপর ধারাবাহিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ন বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়ে দেয় যে তারা কেন্দ্রীয় পদ্ধতিতে অংশ নিচ্ছে না। অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলেন, সেই কারণেই তারা কেন্দ্রীয় পরীক্ষার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।

আগামী মাসে পূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে

বাংলাদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি, প্রকৌশল ও সাধারণ শিক্ষার জন্য সবমিলিয়ে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলেন, এখন ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করতে হবে অনলাইনে। একবার অকৃতকার্য হলে একের অধিক বছর ভর্তি পরীক্ষা দেয়া যাবে কিনা সে বিষয়সহ গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষা সম্পর্কে একটি পরিপূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে মার্চের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে।

সেজন্য একটি কমিটি সকল ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে আলাদাভাবে বসবে। অধ্যাপক শহীদুল্লাহ বলেন, যে গ্রুপে যে বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তারাই সবকিছু ঠিক করবে। প্রশ্নপত্রও তারাই ঠিক করবে। সেখানে তাদের মধ্যে থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দেবে।

তিনি বলেন, দেশে কত শিক্ষার্থী তার উপর নির্ভর করে কোথায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, কার কোথায় সিট পরবে সেগুলোও নির্দিষ্ট গ্রুপই ঠিক করবে। যেমন ধরুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যেরকম, তারা হয়ত তাদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নেবে।

ইউজিসির হতাশা প্রকাশ

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে কমিশনের যুক্তি ছিল দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন শহরে অবস্থিত। শিক্ষার্থীরা ভর্তি নিশ্চিত করতে একের অধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার চেষ্টা করেন। যার ফলে তাদের বিভিন্ন শহরে যেতে হয় এবং পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয়।

আলাদা ফর্ম ও যাওয়ার খরচ মিলিয়ে তাদের অনেক অর্থ খরচ করতে হয়। অনেক সময় একই তারিখে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পড়ে যায়।

এসব বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের ঝামেলা কমিয়ে আনার জন্য সমন্বিত পরীক্ষার কথা বলা হয়েছিল। তবে বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন্দ্রীয় পরীক্ষা পদ্ধতিতে অংশ না নেয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান।