ইউজিসি সচিব ফখরুলকে অপসারণে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
পতিত স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলামকে অপসারণ করতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। সেইসঙ্গে চার দফা দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটি। আজ রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে এ দাবি সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিমউদ্দিন খানের হাতে তুলে দেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা (সচিব) ড. মো. ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করছি। তিনি স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে পরিচিত এবং ৫ আগস্টের পর পতিত ফ্যাসিস্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিযুক্ত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগের প্রেক্ষিতে (যা ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে), বর্তমানে টিকে থাকার জন্য তিনি বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন এবং ইউজিসি কর্তৃপক্ষের একাংশসহ ফ্যাসিবাদের দোসররা তাকে সাপোর্ট দিচ্ছেন। এছাড়া ইউজিসির ফ্যাসিস্ট তালিকায় তার নাম রয়েছে।
স্মারকলিপিতে সচিব ফখরুলের বিরুদ্ধে সংগঠনটি কয়েকটি অভিযোগ তুলে ধরেন। তারমধ্যে অন্যতম হলো- তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত সচিব নন, অথচ অবৈধভাবে সচিব পদ ব্যবহার করছেন; জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন, তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ আখ্যা দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেন; কৌশলে MPQ পরিবর্তন করে পিএইচডি ডিগ্রি দেখিয়ে যুগ্ম-সচিব পদে প্রমোশন হাতিয়ে নিয়েছেন; সচিব পদ ব্যবহার করে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ এবং প্রভাব খাটিয়েছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত পিএইচডি থিসিসে প্লেজিয়ারিজমের অভিযোগও রয়েছে।
সংগঠনটির দাবিগুলো হলো- ড. মো. ফখরুল ইসলামকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তার পদ থেকে অপসারণ করতে হবে, অভিযোগসমূহের উপর ভিত্তি করে তার বিরুদ্ধে ইউজিসি থেকে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, প্লেজিয়ারিজম অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা এবং যদি সত্য প্রমাণিত হয়, তার পিএইচডি ডিগ্রি বাতিল করা এবং অন্যান্য অভিযোগসমূহের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া।
সংগঠনটি অভিযোগগুলো শিক্ষাখাতের স্বচ্ছতা, ন্যায়বিচার এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক এবং এগুলোর সত্যতা যাচাই না করে তাকে পদে বহাল রাখা হলে, এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণ্ন করবে এবং ফ্যাসিস্ট প্রভাবকে উৎসাহিত করবে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির লিগ্যাল সেলের সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ মাহফুজ, ঢাকা মহানগর সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক ফারহান দিনার, হাফিজ নাইম পৃথু, বাদশাহ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিরাজসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।