ইউজিসি’র নতুন নীতিমালা

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে দিতে হবে লিখিত পরীক্ষা

দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি আগামী বছর থেকে দিতে হবে লিখিত পরীক্ষা। এতে পাস করলে নেয়া হবে ডামি ক্লাস এবং মৌখিক পরীক্ষা। এর উপর ভিত্তি করেই আসবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত। দেশের সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এমন নীতিমালা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।

গৃহীত নীতিমালা অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিজ্ঞান, কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজনেস স্টাডিজ, আইন ও চারুকলা অনুষদের প্রভাষক হতে নুন্যতম যোগ্যতা এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৫০ এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সিজিপিএ ৩.৫০ থাকতে হবে। একই নিয়ম প্রযোজ্য ইঞ্জিয়ারিং, আর্কিটেকচার এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে।

জানা যায়, দেশে অনুমোদন পাওয়া ৪৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চালু আছে ৩৭টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে শিক্ষক নিয়োগের স্ব স্ব প্রক্রিয়া। ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ার কারণে পাওয়া যায় নানা রকম অনিয়মের অভিযোগ। আবার অনেক সময় একাডেমিক রেজাল্ট ভাল থাকলেও পাঠদানের দক্ষতা না থাকায় শিক্ষকদের বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। এসব বিষয়কে মাথায় রেখেই শিক্ষক নিয়োগে এই অভিন্ন নীতিমালা চুড়ান্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।

ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, একজন শিক্ষক হওয়ার সক্ষমতা শুধু ভাল রেজাল্ট না, পাশাপাশি তার ডেলিভারি, শেখার আগ্রহ, ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তার মানসিকতা বোঝার সেই যোগ্যতা যেন তার থাকে সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, এই নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ দিলে যোগ্য শিক্ষক পাওয়া সম্ভব বলে মনে করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইউজিসির গৃহীত এই নীতিমালাকে সমর্থন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিও। তবে আরেক দফা আলোচনায় বসতে চায় তারা।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. সামাদ বলেন, ‘লিখিত পরীক্ষার সাথে তো মৌখিক পরীক্ষা থাকবেই, তার সাথে আগ্রহীকে ক্লাসে বক্তৃতা দিতে হবে। সেখানে দেখা হবে তার বক্তৃতা ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে প্রভাব বিস্তার করতে পারে কিনা।

বাংলদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, দক্ষ মানব সম্পদ তৈরীতে যে ধরণের শিক্ষক দরকার সে ধরণের শিক্ষক নিয়োগ দিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট মহলকে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।

নতুন নীতিমালায় শিক্ষকদের পদোন্নতির জন্যও শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা নির্ধারণ করেছে কমিশন। পিএইচডি ছাড়া অধ্যাপক হতে সহযোগী অধ্যাপক পদে ১০ বছরসহ থাকতে হবে ২২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা।


সর্বশেষ সংবাদ