বিশ্বমানের গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ ইউজিসির

  © ফাইল ফটো

দেশে দক্ষ শিক্ষক তৈরির লক্ষ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিশ্বমানের একটি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।  ইউজিসির পক্ষ থেকে বলা হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করবে। পাশাপাশি দেশের আর্থ-সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা করবে, যাতে গবেষণালব্ধ ফলাফল দেশের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ ৪৪তম বার্ষিক প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের কাছে এই বার্ষিক প্রতিবেদনটির মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য আরো বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে ইউজিসি। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (১৮ অক্টোবর) ইউজিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে এ প্রতিবেদন পেশ করেন। চলতি সংসদ অধিবেশনে এটি উপস্থাপনের কথা আছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষে প্রয়োজনীয় উচ্চ ডিগ্রিসম্পন্ন জনবল তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষকদের বর্তমানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। ফলে উচ্চতর গবেষণা পরিচালনার জন্য যে সময়ের প্রয়োজন তা তারা পাচ্ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে দেশে দক্ষ শিক্ষক তৈরির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে প্রধানত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিশ্বমানের একটি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় অতিসত্বর স্থাপন করা উচিত। 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা কার্যক্রম কিছুটা বাড়লেও আশানুরূপ হয়নি। অন্যদিকে, গবেষণা খাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দ কিছুটা বেড়েছে। যা সার্বিক দিক থেকে ইতিবাচক। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইতোমধ্যে গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। তবে তা আরও বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। ২০২১, ২০৩০, এবং ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে গবেষণাখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর বিকল্প নেই।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘ইদানিং দেখা যাচ্ছে, মেধাবী শিক্ষকরা শিক্ষকতা পেশায় থাকতে চান না। সুযোগ তারা পেলে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন অথবা দেশ ত্যাগ করছেন। ফলে তাদেরকে ধরে রাখতে হলে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা জরুরি। গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করাও জরুরি’।

তিনি আরো বলেন, ‘গোটা জাতির গড়ে ওঠার মূল স্তম্ভ হলো শিক্ষক। আজকে যারা সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, রাজনীতিবিদ, আমলা সবাই এই পজিশনে এসেছেন শিক্ষককের সান্নিধ্য থেকেই। ভবিষ্যতেও তাই হবে। ফলে একজন শিক্ষক যত বেশি দক্ষ ও মেধাবী হবেন, একজন শিক্ষার্থীও তত মেধাবী ও দক্ষ হবে। কিন্তু দেশের উচ্চ শিক্ষাস্তরে মেধাবী শিক্ষকের অভাব দেখা দিচ্ছে। এমনটি হতে থাকলে দেশের উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব হবে না’।


সর্বশেষ সংবাদ