সান্ধ্য কোর্সের লাগাম টানতে একক নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ
দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্সের লাগাম টেনে ধরতে একক নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে তদারক সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এজন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে ঢাকা, খুলনা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন অধ্যাপক ও ইউজিসির দুই কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়েছে।
সম্প্রতি এই কমিটি একটি সভাও করেছে। সভায় সান্ধ্য কোর্সের মান বাড়াতে নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একই সাথে আর্থিক বিষয়ের লাগাম টেনে ধরে একটি যৌক্তিক ফি নির্ধারণের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আলোচনা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সান্ধ্য কোর্স থাকবে কি না সে বিষয়ে কমিটির সভায় কোনো আলোচনা হয়নি।
এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী জানান, সান্ধ্য কোর্স পুরোপুরি বন্ধের কথা কেউই বলবে না। সেজন্য এটিকে কীভাবে যৌক্তিকীকরণ করা যায় সেই বিষয়টি দেখতে হবে। আমরা যে সিদ্ধান্তই নেব সেটি সবার মতামতের ভিত্তিতে নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: একযোগে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ শিক্ষকের পদত্যাগ
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সান্ধ্য কোর্স নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়কে আর্থিকভাবে লাভবান করতে এই কোর্স করানো হয়। এর সঙ্গে কতিপয় শিক্ষকের স্বার্থও জড়িত। শিক্ষার্থীদের দক্ষতা কিংবা জ্ঞানচার্চাকে এখানে প্রাধান্য দেওয়া হয় না। এছাড়া শিক্ষকরা এখান থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় নিয়মিত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্লাস সেভাবে নিচ্ছেন না।
তাদের মতে, একজন শিক্ষক যখন সান্ধ্য কোর্স ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সময় দেন তখন তার আর নিয়মিত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য সময় থাকে না। এর ফলে নিয়মিত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিরূপ প্রভাব পড়ছে। খালি চোখে তা দেখা না গেলেও প্রভাব রয়েছে। ইউজিসি নীতিমালা তৈরি করে বিষয়টিকে একটি কাঠামোর মধ্যে আনতে পারলে হয়তো এই সমস্যা আর থাকবে না।
এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর জানান, সান্ধ্য কোর্স নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্স রয়েছে, সেগুলোর তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। বর্তমানে এগুলোর যাচাই প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি সভা হয়েছে। যেসব ডাটাগুলো আমরা হাতে পেয়েছি, সেগুলো নিয়ে সভায় আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সান্ধ্য কোর্স নিয়ে কি পরিবর্তন আসবে, নতুন আরও কী কী সংযোজন হবে—এ বিষয়গুলো নীতিমালা চূড়ান্ত হলে বলা যাবে। নীতিমালা চূড়ান্ত করতে আরও কিছু সময় লাগবে।