অপ্রয়োজনীয় ভবন না করে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূর করার আহবান
প্রয়োজনীয়তার নিরিখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের জন্য দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহবান জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেছেন, প্রয়োজন যাচাই না করে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ভবন নির্মাণ করায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক ভবন ফাঁকা পড়ে আছে। অথচ আবাসিক হল নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূর করা যেতো। অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পসমূহের পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন সংক্রান্ত তথ্য ভাণ্ডারে ভেলিড ডাটা ইনপুট প্রদান সংক্রান্ত কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। ইউজিসি’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ কমিশনের সেমিনার কক্ষে আজ রবিবার (২২ অক্টোবর ২০২৩) এই কর্মশালা আয়োজন করে।
একইসঙ্গে পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোন প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোগুলোকে আহবান জানিয়েছেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে উন্নয়ন কাজ পরিচালিত হলে তা টেকসই হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকল্প সংক্রান্ত সরকারি অনুশাসন যথাযথভাবে অনুসরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, প্রকল্প প্রস্তাব সুচিন্তিত ও যথাযথ না হলে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তা মুখ থুবড়ে পড়বে। তিনি স্পেশিফিকেশন তৈরিতে সংশ্লিষ্টদের যথেষ্ট সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়াও প্রকল্প ব্যয় ৫০ কোটি টাকার অধিক হলে প্রকল্প প্রস্তাব দাখিলের পূর্বে অবশ্যই ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করা এবং ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন সম্পন্ন না করে অবকাঠামো নির্মাণের প্রস্তাব প্রেরণ না করতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
ইউজিসির পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন ও ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান। কর্মশালায় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের উদ্যোগে তৈরি প্রজেক্ট মনিটরিং (ভি.১০) সফটওয়্যার নিয়ে বিষয়বস্ত্তু উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নেতৃত্ব দিতে হবে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সেবাদানের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে। মনিটরিং ও ইভালুয়েশন বিষয়ক সফটওয়্যারের ব্যবহার প্রকল্পের কাজে স্বচ্ছতা গতিশীলতা আনয়ন করতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার তথ্য ও সেবা প্রদান সহজতর করেছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সেবা ও রিপোর্টিং এর ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সকলকে নিরলসভাবে কাজ করার আহবান জানান।
কর্মশালায় ইউজিসি এবং দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা অংশ নেন।