ইবি কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধিতে অনিয়ম পেয়েছে ইউজিসি
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধিতে অনিয়ম পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। সম্প্রতি সরেজমিনে তদন্ত শেষে এ তথ্য পায় ইউজিসি।
ইউজিসি বলছে, ইবি কর্মকর্তাদের বেতন যে গ্রেডে হওয়ার কথা সেই গ্রেডে না দিয়ে স্কেল জাম্পিং করা হয়েছে। যাদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে স্কেল অনুযায়ী তাদের ৪৩ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। তবে এই কর্মকর্তাদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ অবৈধ। ইউজিসি প্রতিবছর সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট বাজেট করে। এই বাজেটের অর্থ সরকার দেয়। ফলে কর্মকর্তাদের বেতনের অতিরিক্ত অর্থ ইউজিসি পরিশোধ করবে না। এটি বিশ্ববিদ্যালয়কেই বহন করতে হবে।
ইউজিসির একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহেরের নেতৃত্বে একটি দল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রো-ভিসি, ডিন থেকে শুরু করে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে গঠিত বোর্ডের সদস্যদের সাথে কথা বলেন ড. তাহের। তাদের বক্তব্য রেকর্ড আকারে জমা নেওয়া হয়েছে।
ওই সূত্র আরও জানায়, ইবি কর্তৃপক্ষ ৩০০ এর অধিক কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিয়েছেন। এত সংখ্যক পদে এক সাথে পদোন্নতি এর আগে কোথাও দেওয়া হয়নি। এছাড়া সকল কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির ক্ষেত্রেই স্কেল জাম্পিং করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের বেতন ৪৩ হাজার টাকাই রাখতে হবে। ৫০ হাজার টাকা করার সুযোগ তাদের দেওয়া হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বক্তব্য এবং অন্যান্য ডকুমেন্টস এখন ক্রস চেক করে দেখা হবে। এরপর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে ইউজিসি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউজিসির এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইবিতে তদন্তে গেলে তারা আমাদের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহারণ দিয়েছে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও নাকি এভাবেই বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে আমরা তাদের জানিয়েছি, যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অবৈধভাবে বেতন বৃদ্ধি করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।.
তিনি আরও বলেন, সরকার আমাদের একটি নির্দিষ্ট বাজেট করে দিয়েছে। আমরা এই বাজেটের বাইরে কাউকে বেতন দিতে পারি না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে এটি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে। যে সকল কর্মকর্তার বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে তাদের আমরা ৪৩ হাজার টাকা করেই বেতন দেব। ৫০ হাজার টাকা বেতন দেওয়া সম্ভব নয়। এটি করা হলে তা অবৈধ হবে। ৪৩ হাজার অতিরিক্ত বেতন দিতে হলে অতিরিক্ত অর্থ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই বগন করতে হবে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইবি কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সেটি নিয়ে তদন্ত চলছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বক্তব্য নিয়েছি। আমাদের কথা এবং আইনগুলো তাদের অবহিত করা হয়েছে। যে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে তা এখন যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।