বর্ষামূখর দিনকে যেভাবে উপভোগ্য করা যায়
বর্ষামূখর দিন মানেই কারো কাছে বৃষ্টি বিলাস, কারো কাছে ঘরবন্দি বিরক্তিকর সময় কাটানো। গ্রীষ্মের দীর্ঘ তাপদাহ শেষে যখন প্রশান্তির বৃষ্টি শুরুতে ভালো লাগলেও পরবর্তীতে সেটা তেমন আনন্দদায়ক হয়ে উঠেনা। কেননা দিনভর বৃষ্টি যেন নিজের স্বাধীন বিচরণে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। একই ভাবে এ বৃষ্টি হয়ে পড়ে প্রয়োজনীয় অনেক কাজকর্মের অন্তরায়।
ফলে সব কাজ ফেলে অনেকে ঘরবন্দী দিনাযাপন করতে বাধ্য হয়। তেমন কোন কাজ না থাকায় অনেকের কাছে অলস এ সময়টা বিরক্তিকর হয়ে উঠে। তবে চাইলে বৃষ্টিমূখর এই অলস সময়টাকেও কাজে লাগিয়ে করা যেতে পারে আনন্দময়। নিজের বহির্মুখি চিন্তার জগতটা ঘরমুখি করে উপভোগ্য করতে পারি এই বর্ষণমুখর দিনটিকে। ভাবছেন কিভাবে দিনটি উপভোগ্য করবেন? চলুন জেনে নেয়া যাক বর্ষামূখর দিনকে উপভোগ্য করার উপায়-
বৃষ্টি বিলাসে নিজেকে মেলে ধরুন
সকাল থেকে বৃষ্টির জন্য বাহিরে যেতে পারছেন না। ঘরে বসে কোন কাজও খুঁজে পাচ্ছেন না। শুয়ে থেকে থেকে বিরক্ত হচ্ছেন। তবে বৃষ্টিতে নেমে পড়ুন। বৃষ্টির পানিতে প্রিয়জনের হাতে হাত রেখে নিজেকে মেলে ধরুন। শৈশবের স্মৃতি পুনরাবৃত্তি করে বৃষ্টিতে ভিজিয়ে ফেলুন নিজেকে। অথবা পরিবারের অন্যকেও বৃষ্টি বিলাসের সঙ্গী করতে পারেন। তবে ঠান্ডা জনিত সমস্যা থাকলে এ থেকে বিরত থাকায় ভালো।
আরও পড়ুন: ‘বড় বড় স্বপ্ন দেখুন, স্বপ্ন দেখতে ভয় পাবেন না’
ঘরে বসে সিনেমা দেখতে পারেন
বৃষ্টির দিন স্বভাবতই রোমান্টিক হয়। মনে পড়ে যায় ফেলে আসা রোমাঞ্চকর ঘটনাগুলো। মনে পড়ে যায় সোনালী অতীতের গল্প। তাই ঘরে শুধু শুধু বসে না থেকে দেখে ফেলুন পছন্দের কোন মুভি কিংবা গান। তাছাড়া সিনেমা প্রেমিদের এটাই মোক্ষম সময়। যারা সিমেনা ভালোবাসেন কিন্তু কাজের চাপে দেখার সুযোগ পাচ্ছেন না। তাই দারুণ এ সুযোগে পছন্দের কোন খাবার চিবাতে চিবাতে দেখতে থাকুন পছন্দের কোন মুভি।
বই পড়তে পারেন
ঝড়-বৃষ্টির চোটে বাহিরে বের হওয়া দায়। আড্ডা দেয়ার মতো পাশে তেমন কোন সঙ্গী নেই। তাহলে বসে বসে গল্পের কোন বই পড়তে পারেন। তাছাড়া কবিতা পড়ার পাশাপাশি তা আবৃত্তিও করতে পারেন নিজের মতো করে। এমনকি নিজের আবৃত্তি করা কবিতাটি রেকর্ড করে শোনাতে পারেন প্রিয়জনদের।
আরও পড়ুন: মস্তিস্কের শক্তি বাড়ানোর সেরা ৭ উপায়
পাশে কোথাও ঘুরে আসুন
দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি। বাড়িতে বিরক্তি। আড্ডা দেওয়ার কেউ নেই। সারাদিন শুয়ে-বসে থেকে থেকে ক্লান্ত। তাহলে পাশের কোন বাড়ি কিংবা দোকান থেকে ঘুরে আসতে পারেন। হয়তো আপনার মতোই অনেকে বিরক্তি থেকে বাঁচতে সেখানে এসে বসেছে। বেশ! পেয়ে গেলেন সঙ্গী। জমে উঠুক আড্ডা। ব্যাপারটা বেশ জমে গেল না?
মজাদার রান্না করতে পারেন
অনেকদিন থেকে ভাবছেন মজাদার কোন রান্না করবেন। কিন্তু কাজের চাপে করা হয়ে উঠছে না। তবে এটাই মোক্ষম সময়। চলে যান রান্না ঘরে। শুরু করুন সেই মজাদার রান্নার প্রস্তুতি। গরমা গরম মজাদার এই রান্না পরিবার কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে বসে খাওয়ার মজাই আলাদা। প্রিয় মানুষদের সাথে প্রিয় রান্নার স্বাদ, তা-কি প্রতিদিন পাওয়া যায়!
ঘরের ছোট ছোট কাজগুলো করে ফেলুন
বাহিরে মশুলধারে বৃষ্টি। সকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই। নেট স্পিড কচ্ছপ গতিতে চলছে। এই পাচ্ছে তো, আবার নেই। বই পড়তেও আর ভালো লাগছে না। শুয়ে থাকতেও বিরক্তি। কি করব বুঝতে পারছেন না! এমন যখন অবস্থা, তখন দ্রুত উঠে পড়ুন। সপ্তাহ জুড়ে অগোছালো থাকা ঘরটাকে গুছিয়ে ফেলুন। বন্ধুর সাথে মশকরা করতে গিয়ে জামার বোতামটা ছিঁড়ে গেছে কিন্তু পরে আর লাগাতে পারেন নি। সময় নষ্ট না করে, সেটা এখন লাগিয়ে ফেলুন। বাবার জুতার তলাটা খুলে গেছে, ডোয়ার থেকে সুপারগুলুটা বের করে জুতাটা ঠিক করে ফেলুন। মা'র মাথাটা উশকো খুশকো হয়ে আছে, ঘর থেকে তেলটা নিয়ে মাথায় লাগিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানোর উপায়
পরিবারকে সময় দিন
কতোদিন তো হলো ক্লাস কিংবা কর্মব্যস্ততার কারণে মায়ের পাশে বসে গল্প করার সুযোগ পান না। অনেকে সারাদিন ফোন হাতে মহা ব্যস্ত সময় পার করেন কিন্তু বাবা'র সাথে হাঁটতে যাওয়ার সময় পান না। বন্ধুর সাথে আড্ডা, খেলাধুলা, ছুটোছুটি শেষে রাতে এসে ঘুম। বাবা-মা চাইলেও সেভাবে সন্তানের দেখা পান না। ছোট ভাই-বোনেরা কতদিন বায়না করেছে লুকোচুরি খেলবে বলে, ব্যস্তায় তা পারেন নি। কিন্তু আজ তাদের বায়না পূরণ করুন।