১৩ জুন ২০২২, ১১:৩৯

সন্তানের বিষণ্নতাও হতে পারে আত্মহত্যার কারণ, কাটাবেন যেভাবে

বিষণ্নতা  © প্রতীকী ছবি

বিষণ্নতা এমন একটি মানসিক সমস্যা যেখানে কোনো ব্যক্তি হতাশ, মন খারাপ এবং সবকিছুর প্রতি অনীহা বোধ করে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক লক্ষণ প্রকাশ পায়। বিষণ্নতার কারণে ব্যক্তির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, শিক্ষাগত, পেশাগত ও সামাজিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্বাভাবিক কর্মতৎপরতা ব্যাহত হয়। এমনকি চূড়ান্ত পর্যায়ে ব্যক্তি আত্মহত্যার মতো ভয়াবহ সিদ্ধান্তও নিয়ে বসতে পারেন।

বড়দের মতো নানা কারণে ছোটদের মধ্যেও বিষণ্নতা দেখা দেয়। কিন্তু অনেক বাবা-মাই তা বুঝতে পারেন না। তারা মনে করেন, দামি উপহার দিলে হয়তো তাদের মন খারাপ কেটে যাবে। কিন্তু দীর্ঘদিন বিষণ্নতা থাকলে ধীরে ধীরে কিশোর-কিশোরীকে একাকীত্ব গ্রাস করে ফেলে। আর এ অবস্থায় তারা যেকোনো একিটি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে বসতে পারে।

তাই সন্তান বিষণ্নতা ভূগছে কিনা তা জানতে কয়েকটি লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখুন। যেমন-

১. প্রতিদিনের কাজকর্মে অনীহা

২. অপরাধবোধ এবং আত্মপ্রত্যয়ের অভাব

৩. রাতে না ঘুমোনো

৪. খিদে না পাওয়া বা বেশি-বেশি খাওয়া

৫. অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়া এবং আশেপাশের ঘটনা থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া

৬. অধ্যবসায়ের অভাব, দুর্বল স্মৃতি এবং নেগেটিভ চিন্তাভাবনা

৭. আত্মহত্যা নিয়ে কথা বলা বা সেই বিষয়ে নেটসার্ফিং করা

যা করণীয়

সে পড়াশোনা করছে কিনা সেটা দেখা যেমন কর্তব্য, সেরকমই তার মনে কী চলছে সেটা বোঝাটাও জরুরি। হোমওয়ার্কের খাতা দেখার সঙ্গে খোঁজ নিন সে সারাদিন স্কুলে বা কলেজে কী করেছে। তাকে কোনও বিশেষ ঘটনা তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে কিনা সেটাও বোঝার চেষ্টা করুন।

১. সন্তানের সাথে কথা বলুন।

২. তাকে সৃষ্টিশীল কাজে আগ্রহী করে তুলুন।

৩. সুন্দর পারিবারিক মুহূর্ত কাটান।

৪. সন্তানকে তার ডিভাইসটি ব্যবহারের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিন।

৫. সন্তানের করা নতুন কোনো কাজে তাকে উৎসাহ দিন।

৬. পরীক্ষার ফল খারাপ হলে বকাঝকা না করে সন্তানের আত্মপ্রত্যয় বাড়ান। পরেরবার ভালো করার জন্য তাকে উৎসাহ দিন।

৭. অস্বাভাবিক কোনো আচরণ চোখে পড়লে তাকে সহজভাবে প্রশ্ন করুন।

৮. সন্তানকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে যান।

৯. তাদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এ অভ্যাস গড়তে আপনিও নিয়মিত বই পড়ুন।

মানসিক স্বাস্থ্যও যে শারীরিক স্বাস্থ্যের মতই গুরুত্বপূর্ণ তা অনেকেই বুঝতে পারেন না৷ নগরেই আত্মহত্যা বেশি ঘটে৷ বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়ছে৷ প্রযুক্তি মানুষকে যেমন সচেতন করে তেমনি আত্মহত্যাপ্রবণ করে৷ ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে আত্মহত্যার মধ্যে কেউ ‘বীরত্ব’ খুঁজে পেতে পারেন বলে মনে করেন এই মনোচিকিৎসক৷ এই প্রবণতা কিশোর-কিশোরীদের মাঝে বেশি দেখা যাচ্ছে। তাই সন্তানের আচরণবিধি নিয়ে সচেতন থাকতে হবে সকল অভিভাবকের।

এখন অনেক অনলাইন সাইটে বাবা-মাসহ সন্তানের বিনামূল্যে কাউন্সেলিং হয়, সেখানে অংশগ্রহণ করুন।
শরীর যেরকম খারাপ হয়, ঠিক সেরকমই মনও খারাপ হতে পারে। তাই সেই সমস্যাকে এড়িয়ে না গিয়ে সন্তানের বন্ধু হয়ে উঠুন। প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন।