ঘাস চাষে লাভ বেশি
দেশে অন্যান্য ফসলের তুলনায় ঘাস চাষে লাভ বেশি। তাই বেশ কয়েকটি জেলায় কৃষকরা ঘাস চাষে মনোযোগ বাড়িয়েছেন। এর মধ্যে সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, রংপুর এবং বগুড়া জেলা অন্যতম। এসব জেলার চাষীরা এখন বাণিজ্যিকভাবে ঘাস চাষের দিকে ঝুঁকছেন বেশি। কেননা গবাদি পশুর প্রধান খাদ্য হিসাবে হাইব্রিড জাতের বিভিন্ন ঘাস উৎপাদন করা তুলনামূলক সহজ আর বাজারে বিক্রি করে তা থেকে ভাল আয়ও করা যাচ্ছে।
এই ঘাস চাষে খরচ কম হলেও বেশি লাভ হয়। তাই অনেকেই গরু, ছাগল লালন পালনের পাশাপাশি ঘাস বিক্রি করে বাড়তি অর্থ কামাচ্ছেন। এসব জেলায় চাষীরা যেসব হাইব্রিড ঘাস চাষ করছেন তার মধ্যে নেপিয়ার ঘাস বেশ জনপ্রিয়। এটি একটি হাইব্রিড জাতের দ্রুত বর্ধনশীল ঘাস। অল্প জায়গায় কম সময়ে বেশি উৎপাদন করা যায়। গবাদিপশুর জন্য এটি একটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ঘাস।
উচ্চ ফলনশীল ঘাস বছরে একবার রোপণ করলে ৬ থেকে ৮ বার কাটা যায়। পাঁচ থেকে ছয় বছর টানা ফলন পাওয়া যায়। এক একর জমিতে চাষ করা ঘাস দিয়ে অনায়াসে ২০ থেকে ২২ টি গাভী পালন করা যায়। এই পরিমাণ জমিতে বছরে ১৮০ থেকে ২০০ মেট্রিকটন সবুজ ঘাস পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: কাঁচা মরিচের স্বাস্থ্য উপকারিতা
এছাড়া দেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ দিন দিন কমে যাওয়ার কারণে হাইড্রোপনিক ঘাস চাষের চাহিদাও বাড়ছে। গবাদি পশুর খামারের সারা বছরের খাদ্য চাহিদা পূরণ করার জন্য কাঁচা ঘাসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। মাটি ছাড়া শুধু মাত্র পানি ব্যবহার করে ঘাস চাষ করাকে হাইড্রোপনিক ঘাস বলে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, ঘাস চাষের পদ্ধতি সহজ, খরচ কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় দিন দিন এই ঘাস চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। বর্তমানে অনেক কৃষক এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করেছেন। আমরা তাদের নানাভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি।
এদিকে মেহেরপুর জেলা খামার বাড়ির উপ-পরিচালক ড. মোঃ আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, ঘাস গবাদিপশুর জন্য খুব আকর্ষণীয়, সুস্বাদু এবং উচ্চ ক্রুড প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। ঘাসের পুষ্টিমান খড় থেকে বেশি। তাই এই ঘাস খেয়ে গবাদি পশু তরতাজা হয় দ্রুত। শুধুমাত্র ঘাস চাষ করেই সারা বছর গবাদিপশুর কাঁচা ঘাসের চাহিদা মেটানো সম্ভব।