ইফতারে যা যা খেতে পারেন
সারাদিন রোজা রাখার পর সূর্য ডুবার সঙ্গে সঙ্গেই রমজানের ইফতারের মাধ্যমে রোজা ভাঙ্গেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। তারা সূর্য অস্ত যাবার আগ মুহুর্তে পরিবার, আত্মীয় স্বজন কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে বসে ইফতার করার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। ইফতার উপভোগ্য বিষয় তবে এই পবিত্র মাহে রমযান মাসে ইফতারে খাবারের ভারসাম্য আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ইফতারের খাবার হওয়া উচিত এমন এক ধরনের যা রোজাদারদের শরীরে পর্যাপ্ত শক্তি সঞ্চয় করতে সহায়তা করে এবং ইবাদতের জন্য শরীরকে ঠিকঠাক প্রস্তত রাখে। এমন কী পরের দিন রোজা রাখতেও সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের সম্প্রচার বন্ধ
এ জন্য শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে আপনাকে ইফতারের জন্য সঠিক খাবার গ্রহণ করতে হবে। রমজান সাধনার মাস হলেও এ সময়ে ভাল খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা যায়। যা রমযান মাসের রোজা শেষ হওয়ার পরেও আপনার অভ্যাসে থেকে যাবে। এদিকে, এবারের পবিত্র রমযান শুরু হয়েছে গরমের মওসুমে। এরইমধ্যে প্রচণ্ড গরমের কারণে অতিষ্ট পুরো দেশবাসী। তাই এই গরমে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে রমযানের ইফতারে নিতে পারেন বাড়তি সতর্কতা। গরমের মধ্যে রমযানের রোজা ভাঙতে ইফতারে কী খেলে স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে, চলুন জেনে নেই:
খাওয়ার আগে পানি খেয়ে নিন: পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল পানীয় পান করুন বিশেষ করে খাবার পানি। এটি শরীরের পানিশূন্যতা দূর করবে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় তরল সরবরাহ করবে। খাবার পানি আমাদের ডিহাইড্রেশন দূর করতে সহায়তা করে। হজম প্রক্রিয়ায় বিলম্ব এড়াতে খাবার খাওয়ার আগে ১-২ গ্লাস পানি পান করুন এবং এরপর কিছুক্ষণ সময় নিয়ে খাবার খেয়ে নেন। তবে বাজারের পানীয় থেকে সতর্ক থাকুন কারণ এতে প্রচুর চিনি ও ক্যালরি থাকে। বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিসের রোগী তারা একদম এড়িয়ে চলবেন।
আরও পড়ুন: কীভাবে এলো মাহে রমজানের রোজা?
খেজুর : খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। খেজুরে প্রচুর শর্করা থাকে। খেজুরের মধ্যে শর্করা ছাড়াও প্রায় সব ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। ইফতারে মাঝারি সাইজের ৪ থেকে ৫টি খেজুর খেতে পারেন। এতে প্রায় ১০০ ক্যালরি পেতে পারেন।
তরল খাবার স্যুপ: এই গরমে ইফতারিতে স্যুপ খেতে পারেন। এটি আপনার শরীরের পানিশূন্যতা দূর করবে। বিভিন্ন সবজির স্যুপ বিশেষ করে মসুর ডাল, টমেটো, গাজর মিশ্রিত স্যুপ বানিয়ে খেতে পারেন। তবে যতটা সম্ভব মাংস জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
প্রচুর ক্যালরিযুক্ত কলা: ফলের মধ্যে ইফতারে কলা খুব উপকারি একটা খাবার। বেশি পরিমাণে ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেট থাকার কারণে ইফতারে কলা বেশ কার্যকর খাবার। একটি কলায় প্রায় ১০৫ ক্যালোরি থাকে। তাই প্রতিদিন ইফতারে অন্তত ১টি করে কলা খেতে পারেন।
অল্প পরিমাণে ছোলা-বুট: পরিমাণে অল্প ছোলা-বুট খাওয়া যেতে পারে। ৫০ গ্রাম ছোলা-বুটে প্রায় ১৮০ ক্যালোরি রয়েছে। ২০-২৫ গ্রাম এর চাইতে বেশি না খাওয়াই ভালো। কারণ ছোলা-বুট হজম হতে দীর্ঘ সময় লাগে।
আরও পড়ুন: এই গরমেও আরামে থাকার উপায়
প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিম: প্রতিদিন অন্তত একটি করে ডিম খেতে পারেন। কেননা ডিমে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন থাকে যা আমাদের দেহের হাড়কে মজবুত রাখে। তাছাড়া ১টি ডিমে প্রায় ৮০ ক্যালোরি থাকে।
ফল-মূল খেতে পারেন: অন্যান্য ফল-মূল যেমন তরমুজ, আপেল, কমলা এইসব খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরের পানিশূন্যতা দূর হবে। এছাড়া শরীরে প্রচুর ভিটামিন পাবেন।
তরল জাতীয় খাবার খান: যদি সম্ভব হয় ইফতারিতে তাজা ফলের রস বা গরুর দুধ খেতে পারেন। ডাবের পানি, ইসবগুলের ভুসি, লেবুর শরবত ইত্যাদি তরল জাতীয় খাবারও খেতে পারেন। এইগুলোও শরীরের পানিশূন্যতা দূর করবে। ইফতার মেন্যুতে থাকা এসব খাবার আপনার স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে সাহায্য করবে।