ছাঁটাইকালীন মানসিক চাপ সহজে নিয়ন্ত্রণ করবেন যেভাবে
বিশ্বের নানান প্রান্তের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তি-চালিত এই যুগে নিজেদের উন্নতির জন্য দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জনে তাদের সময় এবং শক্তি বিনিয়োগ করে। তবে, শিল্পের চলমান ছাঁটাই নবীন ও কর্মরত পেশাদারদের ওপর বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে। চলুন দেখে নেওয়া যাক সহজ একটি কৌশল, যা আপনাকে এই অস্থিরতার মধ্যে চাপ কমাতে সহায়তা করতে পারে।
অন্যায্যভাবে কর্মী ছাঁটাই কর্মরত পেশাদারদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে—যারা কোম্পানির উন্নতির জন্য তাদের সময় ও শক্তি উৎসর্গ করেন। এছাড়াও, এমন পরিস্থিতি নবীনদের নিয়োগেও বাধার সৃষ্টি করে। কর্মীরা আজকাল আতঙ্কের মধ্যে থাকেন এই ভেবে যে, পরবর্তী ছাঁটাইয়ের তালিকায় তাদেরও নাম থাকতে পারে। প্রযুক্তিখাতে কর্মরতদের মধ্যে এমন চাপ এবং উদ্বেগ এখন খুবই সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাকরি হারানোর অবিরাম চিন্তা কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগের একটি চক্র তৈরি করে।
ক্রিস্টোফার হ্যানসেন, যিনি একজন পেশাদার পরামর্শদাতা, এই বিষয়ে জোর দিয়ে বলেছেন যে, ছাঁটাইয়ের মুখোমুখি হওয়া কর্মীদের মতোই টিকে থাকা কর্মীদের উদ্বেগও বড় একটি সমস্যা। কারণ, কর্মীরা সবসময় এক অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যে আচ্ছন্ন থাকেন এবং ভাবতে থাকেন তারা পরবর্তী লক্ষ্য কিনা। অস্পষ্ট ও অনিশ্চিত এই হুমকি মোকাবিলা করা সত্যিই কঠিন।
এই কঠিন সময়ে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে এমন সহজ পাঁচ টিপস অনুসরণ করে নিজেকে চাপমুক্ত রাখতে পারেন।
আপনার অনুভূতিগুলোকে স্বীকার করুন
ছাঁটাইয়ের পর চাপ, রাগ, দুঃখ এবং উদ্বেগের মতো নানান অনুভূতি হওয়া স্বাভাবিক। কোনো রকম বাছ-বিচার ছাড়াই নিজের এই অনুভূতিগুলোকে মেনে নিন। আবেগ জমিয়ে রাখলে মানসিক চাপ তৈরি হতে পারে, যা আপনাকে উদাসীন করে তুলতে পারে এবং অবাঞ্ছিত চিন্তায় ডুবিয়ে দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আপনি বিশ্বাসযোগ্য কারো সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে পারেন অথবা আপনার অনুভূতিগুলো একটি ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন।
একটি রুটিন অনুসরণ করুন
কঠিন পরিস্থিতিতে আপনার মনকে কেন্দ্রীভূত রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মন ও শরীরকে সুস্থ রেখে দিনটি শুরু করতে চেষ্টা করুন। আপনার দৈনন্দিন রুটিনে কিছু ব্যায়াম যুক্ত করতে পারেন এবং দক্ষতা উন্নয়নের জন্যও কিছু সময় বরাদ্দ রাখতে পারেন।
নিজের যত্নে মনোযোগ দিন
চাপের সময়ে, নিজের অযত্ন করার প্রবণতা অনেকের মধ্যেই থাকে এবং তা একেবারে অস্বাভাবিক নয়। তবে আপনাকেই নিশ্চিত করতে হবে যে আপনাকে আপনার মন ও শরীরের যত্ন সঠিকভাবে নিতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ ও নিজেকে ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত রাখুন। আপনার মন শান্ত করতে আপনি বই পড়তে, প্রিয় সিনেমা দেখতে বা গানও শুনতে পারেন।
নিকটজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন
একাকী মানসিক চাপ মোকাবিলা চাইলে আপনার মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। একাকীত্ব প্রায়ই মানুষকে অতিরিক্ত চিন্তায় ফেলে মানুষের হতাশা ও উদ্বেগ বাড়িয়ে তোলে। বন্ধু, পরিবার ও নিকটজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। নিকটজনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখলে তা আপনাকে অপ্রাসঙ্গিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় থেকে মনকে সরিয়ে রাখতে সাহায্য করবে এবং একাকীত্ব ঘোচাতেও সহায়ক হবে।
ভবিষ্যতের দিকে মনোযোগ দিন
বর্তমান পরিস্থিতি মেনে নেওয়া যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ততটাই গুরুত্বপূর্ণ ভবিষ্যতের দিকে মনোনিবেশ করা। জীবনের লক্ষ্য পূরণে কাজে মনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি উদীয়মান প্রাসঙ্গিক বিষয়ে নিজেকে নিযুক্ত রাখতে চেষ্টা করুন। সবসময় আপনি নতুন একটি করে বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে পারেন। নিজের কোনো প্যাশন প্রজেক্ট শুরু করতে পারেন, অথবা একটি নতুন শিল্পে কাজ করার চেষ্টা চালাতে পারেন।
ছাঁটাইয়ের সময় মানসিক চাপ মোকাবিলা করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হলেও সহজ কিছু পদক্ষেপ অনুসরণের সাধ্যমে আপনি আপনার পরিস্থিতি সহজ করতে পারেন এবং আপনার উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে পারেন।
তথ্যসূত্র: টেক গিগ