এইচএসসি পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

  © সংগৃহীত

আগামী ৩০ জুন শুরু হচ্ছে ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। শেষ সময়ে এসে প্রস্তুতি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকেই। শেষমুহূর্তের প্রস্তুতি বা রিভাইজ যখন কঠিন হয়ে পড়ে তখন কোথা থেকে তা শুরু করতে হবে সেটাও অনেকেই বুঝতে পারেননা অনেক সময়। পরীক্ষার শেষ সময়ের প্রস্তুতি বা রিভাইজ পর্ব যাতে আপনি আরও কার্যকর-ভাবে সম্পন্ন করতে পারেন, সেজন্য এমন স্টাডি টেকনিক বেছে নিন যা কার্যকর এবং ইতিবাচক মনোভাব রাখতে সাহায্য করবে।

১. আগেভাগেই শুরু করা
পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে আসার আগেভাগেই শুরু করতে হবে প্রস্তুতি যা আপনাকে রাখতে শান্ত স্থির । সকাল বেলা পড়ার চেষ্টা করুন কেননা সেইসময় ব্রেইন সতেজ এবং শিথিল থাকে। রিভিশন কখনোই পরের বেলার জন্য রেখে দেয়া সঠিক কাজ নয় কারণ দুপুর বা বিকেলের দিকে আপনি আরও বেশি ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি রিভিশন দেয়ার জন্য একটি রুটিন তৈরি করে নেয়া যায়। এর ফলে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে পাঠ শুরু এবং শেষ করা সম্ভব হবে।

২. কোন বিষয়টিতে ফোকাস করবেন সেটি ঠিক করুন
প্র্যাকটিক্যাল? নাকি বিষয় ভিত্তিক? বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মনোভাব কাজ করে। সুতরাং পরীক্ষার ধরণ বুঝে কি পরিমাণ সিলেবাস বা পাঠ্যসূচি পড়তে হবে তা অনুধাবন করতে হবে। সহজবোধ্য বিষয়ের ক্ষেত্রে সমগ্র বিষয় বড়বার প্রয়োজন নাও হতে পারে। সেখানে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর ফোকাস ঠিক করে সে বিষয়ে গভীরভাবে পাঠ নিতে হবে। আবার মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন বা নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রের ক্ষেত্রে আরও বিশদ পাঠের প্রয়োজন হবে।

৩. পরিকল্পনা গ্রহণ
এটাকে সময়সাপেক্ষ মনে হতে পারে কিন্তু একটি পূর্ণাঙ্গ রিভিশন পরিকল্পনা প্রকৃতপক্ষে আপনার সময়কে বাঁচিয়ে দেবে। প্রতিদিন কতটুকু রিভাইজ দেবেন সেটা ভাববার জন্য এক মিনিটও সময় নষ্ট করতে হবেনা। এটা আপনার পাঠের কতটা অগ্রগতি হল সেটা যাচাই করারও একটা উপায় বটে। সময়সূচী যতটা সম্ভব বিস্তারিত বা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নির্ধারণ করে নিন -এর সাথে যত সম্পর্কিত পেপার বা নোট দেখতে হতে পারে তা-ও যুক্ত করুন। এবং সামাজিকতা, শরীরচর্চা কিংবা অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিরতি নিতে কখনোই ভুলে গেলে চলবে না।

৪. বিরতি দিয়ে পড়ুন
একটি বিষয় একদিনে ১০ ঘণ্টা পড়ার চেয়ে ১০ দিন ধরে এক ঘণ্টা করে পাঠ অধিক উপকারী। তথ্যগুলো স্মৃতিতে গেঁথে রাখার ক্ষেত্রে সময় প্রয়োজন কিন্তু বিরতিময় কৌশল প্রমাণ করেছে যে সবচেয়ে কার্যকর। এই পদ্ধতিতে একেকটি রিভিশনের মধ্যবর্তী সময়ে পাঠ ভোলার এবং তা পুনরায় আত্মস্থ করার জন্য সময় রাখার নিয়ম। এই কৌশলটিকে লেখাপড়া এবং মুখস্থ করার ক্ষেত্রে গবেষণার ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বলা হয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে একেকটি পরীক্ষার ক্ষেত্রে নেয়া কৌশল অন্য ধরনের পরীক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর নাও হতে পারে। যে কারণে সবসময় রিভিশন শুরু করতে হবে আগেভাগে।

৫. নিজেকে যাচাই করুন
নিজেকে যাচাইকরণ অবশ্যই তথ্য-উপাত্ত মনে রাখার অন্যতম কার্যকর উপায়, এমনটাই বলেছেন মনোবিজ্ঞানী এবং স্নায়ুবিজ্ঞানীরা। এর ফলে কোনকিছু মুখস্থ করার চেয়ে তা বোঝা অনেক বেশি সহায়ক হয়, এবং সেটা আপনার জ্ঞানের কোন ফাঁক-ফোকর থাকলে তা অনুধাবন করতে সুযোগ দেয়। রিভিশন সেশন শেষ হলে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন কিংবা নিজেকে কুইজ করার মধ্য দিয়ে যাচাই করা সম্ভব।

৬. নিজেই হয়ে উঠুন শিক্ষক
তো আপনি রিভাইজ দিয়েছেন, নিজেকে যাচাই করেছেন-এরপর কী? এবার গিয়ে নিজের লব্ধ জ্ঞান অন্য একজন কাউকে শেখাতে শুরু করুন, অবশ্যই।এটা একটা বহুল পরিচিত কৌশল। এটা আপনার স্মরণশক্তিকে উদ্দীপিত করে এবং মনে রাখতে সাহায্য করে। আর অন্য কাউকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য আপনার নিজেকে একটি পরিষ্কার এবং কাঠামোগত পদ্ধতিতে আপনার জ্ঞান অর্জন করতে হবে-সেটাও বড় ভূমিকা রাখবে।


সর্বশেষ সংবাদ