তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির একগুচ্ছ পরামর্শ দেশসেরা তৃতীয় আজিজের

এস. এম. নাফিসুল আজিজ
এস. এম. নাফিসুল আজিজ  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ও খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মিলিতভাবে প্রকৌশল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হয়ে থাকে। প্রকৌশল হওয়ার বাসনায় এ বিশ্ববিদ্যালয় গুলি পছন্দের শীর্ষে থাকে। প্রকৌশল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নয়, একটু ব্যতিক্রম। তাই প্রস্তুতিও হতে হবে সাজানো-গোছানো ও পরিকল্পিত। কীভাবে একজন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী প্রস্তুতি নেবে, নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে পরামর্শ দিয়েছেন ২০২২-২৩ সেশনে প্রকৌশল গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় তৃতীয় হওয়া এস. এম. নাফিসুল আজিজ-

বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ
গণিত: এই বিষয়ে ভালো করার জন্য প্রশ্নব্যাংক সম্পর্কে ভালো দখল থাকা জরুরি। কেননা প্রায় প্রতিবারই বেশ কিছু সংখ্যক প্রশ্ন হুবহু কোশ্চেন ব্যাংক থেকে আসে। এছাড়া একই টাইপের বিগত বছরের প্রশ্নসমূহ অনেক সময় পুনরাবৃত্তি হতে দেখা যায়।তবে কেবল প্রশ্ন ব্যাংক থেকে কমনের আশা না করে প্রতিটি অধ্যায়ের সকল বিষয়বস্তু ভালোভাবে বোঝার ও আয়ত্তে আনার চেষ্টা করতে হবে। বৃত্ত, সরলরেখা, কণিক- এই অধ্যায়গুলোতে প্রায়ই এমন প্রশ্ন আসে,যেগুলো মোটামুটি একটা গ্রাফ একে সলভ করলে সময় কম লাগে। এছাড়া অন্তরীকরণ, যোগজীকরণ, ত্রিকোণমিতি এই অধ্যায়গুলো থেকে প্রায়ই বেশ কিছু সংখ্যক প্রশ্ন এসে থাকে, তাই এই অধ্যায়সমূহে অধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

পদার্থবিজ্ঞান: এই বিষয়ে মুখস্থভিত্তিক প্রশ্ন প্রায় আসেনা বললেই চলে। এ কারণে গাণিতিক বিষয়ক প্রশ্নসমূহ ভালো ভাবে ও দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। দ্রুত সমাধানের জন্য প্র্যাকটিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর পাশাপাশি প্রতিটি অধ্যায় সম্পর্কে কনসেপ্ট ক্লিয়ার রাখা জরুরি। এছাড়া বেশ কিছু অধ্যায় মিলে একটি প্রশ্ন হয়।যেমন:ভেক্টর, নিউটনিয়ান বলবিদ্যা, কাজ শক্তি ও ক্ষমতা, মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ এই অধ্যায়গুলো মিলিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন দেখা যায়। আবার ১ম পত্রের দশম অধ্যায় এবং ২য় পত্রের প্রথম অধ্যায় মিলিয়েও প্রশ্ন দেখা যায়। এছাড়া আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের সূচনা অধ্যায়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ।

রসায়ন: পদার্থবিজ্ঞান ও গণিতের মতো এখানে কেবল ক্যালকুলেটিভ প্রশ্নই আসেনা,বরং এর পাশাপাশি বিভিন্ন থিউরিটিক্যাল প্রশ্ন আসে। মুখস্থভিত্তিক প্রশ্নের মধ্যে বিভিন্ন আদর্শ মান, বিভিন্ন বস্তুর পি এইচ, বিভিন্ন সূত্র সমূহের বিবৃতি এগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া প্রথম পত্রের দ্বিতীয় অধ্যায়ের দ্রাব্যতা ও দ্রাব্যতা গুণফলভিত্তিক অংকসমূহ এবং চতুর্থ অধ্যায়ের  সাম্য ধ্রুবক সংক্রান্ত অংকসমূহ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে দুই পত্রের অধ্যায় গুলোর মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় একটি হলো জৈব রসায়ন, যেখান থেকে প্রায় প্রতি বছরই প্রচুর সংখ্যক প্রশ্ন এসে থাকে।এই অধ্যায়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এবং নামধারী বিক্রিয়া সম্পর্কে ভালো  ধারণা থাকা প্রয়োজন ।

ইংরেজি: যদিও এই বিষয়ে নম্বর ৫০, যেখানে বাকি ৩টি বিষয়ে ১৫০। তবুও ইংরেজি চান্স পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কি ধরনের প্রশ্ন আসে তা বোঝার জন্য প্রশ্নব্যাংক থেকে ধারণা নেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি synonym antonym, right form of verbs, transformation, narration এই টপিকগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
পরীক্ষা সন্নিকটে হওয়ায় এখন একটু কৌশলের সাথে পড়তে হবে।এ সময়টা পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে।সবকিছু রিভিশন দিতে হবে। বারবার প্রশ্নব্যাংক ফলো করার পাশাপাশি যে অধ্যায় গুলো থেকে পরীক্ষায় বেশি প্রশ্ন হয় সেগুলো গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে। 

অনুলিখন: শাহ বিলিয়া জুলফিকার


সর্বশেষ সংবাদ