মেডিকেল ভর্তি: শেষ ১৫ দিন যেভাবে প্রস্তুতি নিবেন
- মোঃ হাবিব খান
- প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:১৪ PM , আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:৪০ PM
বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যতগুলো ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা হচ্ছে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা। বাবা-মার সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ কিংবা মানুষের সেবা করার ইচ্ছা বুকে নিয়ে প্রতিবছর লাখ লাখ পরীক্ষার্থী ভর্তি যুদ্ধে অংশ নেয়। কিন্তু, তাদের মধ্যে অল্প কিছু ছাত্র-ছাত্রী সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে পড়ার সুযোগ পায়। বাকিদের ডাক্তার হবার স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে যায়। অনেকে অর্থের উপর নির্ভর করে প্রাইভেট মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রক্রিয়াটা বেশ ভিন্ন ধরনের। সেখানে অনেক তথ্য মনে রাখতে হয়; গাণিতিক সমস্যাবলি আসার প্রবণতা যদিও কিছুটা কম থাকে।
পরীক্ষার আগের কিছু দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, এই সময়ে কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ থাকে। কোচিংয়ের চাপ থাকে না বলে অনেকে এই সময়ে একটু ঢিল দিয়ে ফেলে যার জন্য অনেক গ্যাপ সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা ভাবে, প্রস্তুতি যা নেওয়ার, তা তো নিয়েছি। এটা সবচেয়ে বড় ভুল। এই সময়টাতেই আরও বেশি বেশি পরিশ্রম করে প্রস্তুতিটি ধরে রাখতে হবে।
শেষ সময়ে নিজের উপর আত্মবিশ্বাসী হতে হবে
সত্যি বলতে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো এমন হয় যে জানা জিনিসগুলোও অনেক সময় গুলিয়ে যায়। তাই আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে বারবার প্রশ্নটা পড়তে হবে, দেখবে উত্তরটা ঠিকই মাথায় আসবে। নিজের ওপর ১০০% আস্থা রাখো। কোনোভাবেই এই কয়েকটি দিন হতাশ হওয়া যাবে না। পরীক্ষার জন্য প্রশ্ন যত কঠিনই হোক না কেন, কোনোভাবে ঘাবড়ানো যাবে না। সব কিছুতে নিজের ওপর ১০০% আস্থা থাকতে হবে। তাহলে মেডিকেলে চান্স পাবে।
যারা সেকেন্ড টাইম পরীক্ষা দিবা তোমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ফাস্ট টাইমার তোমাদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ
পরীক্ষার বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। আশা করি সবার প্রস্তুতি মোটামুটি আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তোমরা মোটামুটি ভালোই পড়েছ। লাস্ট মোমেন্টে তোমাদের নিজেদের মানসিক ভাবে শক্ত থাকতে হবে। কনফিডেন্স থাকতে হবে হাই লেভেলের, যে তুমি পারবা।মানে তোমাকে পারতেই হবে। নতুন করে যা তুমি জীবনে পড়ো নাই তা পড়ার দরকার নাই।যা পড়েছো ওইগুলা বারবার পড়তে থাকো। বেশি বেশি এমসিকিউ প্র্যাকটিস করো এই কয়দিন।
সেকেন্ড টাইমার হিসাবে, সহজ প্রশ্ন বা পারা জিনিস কখনোই ভুল করা যাবে না।এতে চান্স পাওয়ার পসিবিলিটি কমে যাবে। কখনোই তোমাদের নেগেটিভ চিন্তা করা যাবে না। লাস্টের দিকে এসে পড়া ছেড়ে দিও না।বার বার পড়তে থাকো।গুরুত্বপূর্ণ গুলা বা বইয়ে ছক গুলা বা যা তোমার ভুল হয় সবসময় তা প্রতিদিন একটু করে হলেও দেখবা। নিজের উপর বিশ্বাস রাখো পরিশ্রম করো, ভাগ্যে থাকলে অবশ্যই পারবা। আর ভাগ্য দোয়া ও পরিশ্রমের মাধ্যমে পরিবর্তন হয়।।
কিছু জিনিস যা তোমাকে মাথায় রাখতে হবে
১. হাজার হাজার জনের মাঝ থেকে তোমাকে টিকে থাকতে হবে। সেই মানসিকতা তৈরি করতে হবে এখন থেকেই। কিন্তু তোমাকে ঘাবড়ে গেলে বা ভেঙ্গে পড়লে চলবে না। তোমাকে নিজের জায়গা নিজের মেধা দিয়েই ছিনিয়ে নিতে হবে।
২. সময় এক মিনিটও অপচয় করা যাবে না।
৩. কে কত ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে সেটা একদমই খেয়াল রাখবে না। তুমি শুধু নিজের প্রস্তুতি ভালো করে নেবে।
৪. কোনো কিছু না বুঝলে তা রেখে দিবে না। অবশ্যই সময় থাকতে তা বুঝে নেবে। কোন ভাই / আপুর থেকে।
৫.মেডিকেল জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছো, তাই অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কীভাবে চান্স পাব-এসব নিয়ে খুব বেশি বেশি চিন্তা করা যাবেনা। তোমার লক্ষ্য অটুট রাখবে সবসময় মেডিকেলের প্রতি।
৬. পড়ার মাঝে হতাশা আসবে এটা স্বাভাবিক। এই হতাশা কাটিয়ে উঠতে আবার পড়ালেখা ছেড়ে দিও না। একটু সময় নিয়ে হতাশা কাটিয়ে আবার পুরোদমে মেডিকেল ফোকাস নিয়ে পড়া শুরু করো।
৭. প্রস্তুতি নিয়েছি মোটামুটি ভালো পরীক্ষা দিব দেখা যাক কি হয়, এই চিন্তা করে পরীক্ষা দিতে যাবে না। তোমাকে নিজের সেরাটা দিতে হবে, তাহলেই পারবে। এটাই তোমার মূলমন্ত্র।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার আগে অনেক পরিশ্রম করতে হয় তাই নিজেকে সুস্থ রাখা জরুরি। এজন্য নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাবে ও ঘুমের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যারা পরীক্ষার হলে কিছুটা নার্ভাস হয়ে যাও তারা হালকা মেডিটেশন করলে ভাল হবে।
সবার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী পরিচালক: মেডিকেল আওয়ার টার্গেট- নাফ।