০৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:২৮

চোখের কারণে যখন মাথাব্যথা, যা করবেন

মাথা ব্যাথা প্রায় সকলেরই হয়  © সংগৃহীত

মাথা ব্যাথা প্রায় সকলেরই হয়। প্রতি একশ’ জন মানুষের মধ্যে গড়ে ৭৮ জন এ মাথাব্যথায় ভোগেন জীবনের কোন না কোন সময়। এই ব্যাথা ভয়ানক এক সমস্যা। যখন মাথা ব্যথা হয় তখন কোন কিছুই ভালো লাগে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাথা ব্যথার পিছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন চোখ, দাঁত, সাইনাস, মুখের সমস্যার কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। চোখের বিভিন্ন সমস্যার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। 

আমেরিকান কিছু গবেষণার তথ্য দেই। আমেরিকানদের ৮৩ শতাংশ দিনে ২ ঘণ্টার বেশি ডিভাইস ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয় ৫৩ শতাংশ একসাথে দু’টি ডিভাইস ব্যবহার করেন। এ কারণে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ চোখের স্ট্রেইনে আক্রান্ত হন। 

চোখের এ চাপ থেকে হতে পারে মাথাব্যথা। চোখের কারণে যত মাথাব্যথা হয় তার বেশির ভাগ কিন্তু চোখের স্ট্রেইন। চোখের চাপের আরো কিছু উপসর্গ থাকে। যেমন চোখে ক্লান্তি, চোখে ব্যথা, চোখ দিয়ে পানি পড়া বা চোখ শুকিয়ে খচখচ করা, চোখে দেখার সমস্যা হতে পারে। রেস্ট নিলে কিন্তু চোখের সমস্যা কমে যায়।

চোখের জন্য মাথা ব্যথার কারণ যত

মায়োপিয়া বা দৃষ্টিস্বল্পতা, মাইগ্রেন, চোখের ইনফেকশন, বাচ্চাদের স্ট্র্যাবিস্মাস বা বাঁকা চোখ, ড্রাই আই বা চোখে শুষ্কতা এবং চোখের অভ্যন্তরীণ প্রেসার (গ্লকোমা রোগের কারণে) বেড়ে গেলে মাথা ব্যথা হতে পারে।

এছাড়া সঠিক পাওয়ারের চশমা ব্যবহার না করা, দীর্ঘক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিনে তাকিয়ে কাজ করা, পর্যাপ্ত আলো নেই, এমন স্থানে পড়াশোনা বা কাজ করা, ঘুমের অভাবে চোখে ক্লান্তি অনুভব করা এবং প্রেসবায়োপিয়া বা চালশে রোগে ভোগা ব্যক্তির চশমা ব্যবহার না করার কারণে মাথা ব্যথা করতে পারে।

চোখের কারণে মাথাব্যথা দূর করতে হলে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

* দীর্ঘদিন ধরে মাথা ব্যথায় ভুগলে অবশ্যই চোখের পাওয়ার পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

* যাদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপে অনেকক্ষণ কাজ করতে হয় তাদের স্ক্রিন চোখ থেকে কমপক্ষে ২৫ ইঞ্চি দূরে রাখুন। স্ক্রিন রাখুন চোখের লেভেলে খুব বেশি উপরেও না বা নিচেও না।

* কম আলোতে পড়াশোনা বা অন্য কাজ করবেন না।

* স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে টানা কাজ করা যাবে না, ঘন ঘন পলক ফেলতে হবে এবং ২০-২০ রুল অবশ্যই ফলো করতে হবে। ২০-২০ রুল মেনে চলতে হলে টানা ২০ মিনিট কম্পিউটারে কাজ করার পর ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরে তাকাতে হবে। এরপর ২০ সেকেন্ডের জন্য চোখের পাতা বন্ধ করে রাখতে হবে।

* মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে মাইগ্রেন ট্রিগারিং ফ্যাক্টর এড়িয়ে চলতে হবে যেমন—শব্দ, প্রচণ্ড আলো, বিশ্রাম ছাড়া একটানা অতিরিক্ত কাজ করা।

* চোখে ব্যথা হলে বা বেশিক্ষণ কাজ করলে কিছু সময় চোখ বন্ধ করে থাকুন। চোখ অকারণে ডলবেন না।

* বয়স ৪০ বছর হওয়ার পর চক্ষু চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চোখের পাওয়ার পরীক্ষা করাতে হবে।

* পরিবারে গ্লকোমা রোগী থাকলে বাকি সদস্যদের উচিত চক্ষু চিকিৎসকের কাছে গিয়ে গ্লকোমা আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

মাথা ব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন ব্যথানাশক ওষুধ যেমন—প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। তবে খুব প্রয়োজন না হলে অতিরিক্ত ব্যথার ওষুধ না খাওয়াই ভালো। মাথা ব্যথা চলে গেলে এ ওষুধ খাবেন না। আপনার যদি দীর্ঘদিন ধরে মাথা ব্যথার সমস্যায় ভুগলে তা উপেক্ষা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।