গুচ্ছের ‘এ’ ইউনিটের প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে একটি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করছে ২০ টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে নতুন আরো ২ টি বিশ্ববিদ্যালয়। গুচ্ছভুক্ত এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’ তিনটি ইউনিটে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করে থাকে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন রয়েছে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের এ ইউনিটে। সর্বমোট প্রায় ১৩ হাজার ১২১ টি আসন রয়েছে ইউনিটটির অধীনে। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের আজকের প্রতিবেদনে থাকছে বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি নিয়ে কিছু আলোচনা।
গুচ্ছে পাস নম্বর ৩০ হলেও বিগত দুই বছরের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এ ইউনিটে চান্স পেতে সাধারণত ৫০ এর বেশি নম্বর প্রয়োজন হয়েছে। তবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে অন্তত ৬০-৬৫ নম্বরের লক্ষ্য রাখা উচিত।
নম্বর বণ্টন: গুচ্ছে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের পদার্থ বিজ্ঞানে ২৫, রসায়নে ২৫। এই দু’টি বিষয়ের উত্তর বাধ্যতামূলক দিতে হবে। গণিত/জীববিজ্ঞানে ২৫ এবং বাংলা/ইংরেজিতে ২৫ নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। গণিত ও জীববিজ্ঞানের মধ্যে যেকোনো একটি বিষয়ের উত্তর করতে হবে। তবে কেউ চাইলে গণিত এবং জীববিজ্ঞান দুটো বিষয়েরই উত্তর করতে পারবে। জীববিজ্ঞান ও গণিতের মধ্যে যেকোনো একটি বিষয়ের উত্তর করলে তাকে বাংলা অথবা ইংরেজি বিষয়ের উত্তর করতে হবে।
পদার্থবিজ্ঞান: পদার্থবিজ্ঞানে প্রস্তুতির জন্য উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্যবইয়ের প্রতিই জোর দেয়ার পরামর্শ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ইউনিটে চান্সপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের। বিশেষত পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্রের দ্বিতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, অষ্টম ও দশম অধ্যায় এবং দ্বিতীয় পত্রের প্রথম,তৃতীয়, অষ্টম এবং দশম অধ্যায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, প্রতিটি অধ্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা, সূত্রাবলি, ঘটনা ও কারণ, প্রভাব, পার্থক্য, গাণিতিক সমস্যার সমাধান জানতে হবে।
রসায়ন: ভর্তি সহায়ক বইয়ের পূর্বে পাঠ্যবই ভালোভাবে পড়তে হবে। প্রথম পত্রে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অধ্যায় এবং দ্বিতীয় পত্রে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া পদার্থের বিভিন্ন অবস্থা, পর্যায় সারণী, রাসায়নিক গণনা, জারণ-বিজারণ, রাসায়নিক বন্ধন, রাসায়নিক বিক্রিয়া, প্রতীক, সংকেত, যোজনী, গাঠনিক সংকেত, আণবিক সংকেত, রাদারফোর্ড, বোরের পরমাণু মডেল বিষয়গুলো ভালোভাবে আয়ত্ত করতে হবে।
উচ্চতর গণিত: উচ্চতর গণিতে সরলরেখা, কণিক, বৃত্ত, বিপরীত ত্রিকোণমিতিক অনুপাত, দ্বিপদী, বহুপদী, ভেক্টর, বিন্যাস-সমাবেশ, ম্যাট্রিক্স অধ্যায়গুলো অধিক গুরুত্বপূর্ণ। ভর্তি পরীক্ষায় সময় তুলনামূলক কম থাকায় কম সময়ে নির্ভুলভাবে অঙ্ক সমাধানের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
জীববিজ্ঞান: প্রাণীবিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার, আবিষ্কারকের নাম, প্রয়োজনীয় সংজ্ঞা, উদাহরণ, পার্থক্য, উদ্ভিদের শ্রেণীবিন্যাস, সালোক সংশ্লেষণ, শ্বসন, প্রস্বেদন, টিস্যু, টিস্যুতন্ত্র বিষয়গুলো অধিক গুরুত্বপূর্ণ। জীববিজ্ঞানে ম্যালেরিয়ার জীবাণু, কলা, কোষ, প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম, পরিপাকতন্ত্র, সংবহনতন্ত্র, পেশীতন্ত্র, প্রাণীর প্রজননতন্ত্র বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে যতটা সম্ভব প্রতিটি বিষয়ের খুঁটিনাটি বিষয় আয়ত্তে রাখতে হবে।
বাংলা: বাংলা প্রথম পত্রের জন্য মূল বইয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে গদ্য,কবিতা এবং উপন্যাসের মূল বিষয়, লেখক পরিচিতি, তাঁর সাহিত্যকর্ম, জীবনী ইত্যাদি বিষয় জানতে হবে। ব্যাকরণ অংশের জন্য ভাষা, ব্যাকরণ, শব্দ, কারক, সমাস, সন্ধি, বিভক্তি, বচন, বাক্য সংকোচন, বাগধারা, উপসর্গ, অনুসর্গ বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ।
ইংরেজি: বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে ইংরেজির ক্ষেত্রে গ্রামার অংশে অধিক জোর দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে Parts of speech, Article, Tense, Voice, Narration, Correction, Right form of verbs, Translation, Synonyms, Antonyms, Transformation of sentences, Joining sentence, Comprehension প্রভৃতি বিষয় ভালোভাবে পড়তে হবে। পাশাপাশি ইংরেজ কবি ও সাহিত্যিক, বিশেষ করে যাদের লেখা এইচএসসির সিলেবাসে রয়েছে তাদের জীবনও সাহিত্যকর্ম, লেখার বিষয়, উদ্ধৃতি ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয়ও মনে রাখতে হবে।