কোলাজেনসমৃদ্ধ যেসব খাবার বয়স বাড়লেও আপনাকে রাখবে সুস্থ

খাদ্যতালিকায় কোলাজেনসমৃদ্ধ খাবার থাকলে তা বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।
খাদ্যতালিকায় কোলাজেনসমৃদ্ধ খাবার থাকলে তা বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।  © সংগৃহীত

জীবনকে সুন্দর, সুখময় ও সার্থক করে তুলতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন সুস্থ, সবল ও সতেজ দেহ। তাই যে কোনো উপায়ে হোক আমাদের সুস্থ থাকতে হবে। এজন্য নিয়মিত এমন কিছু খাবার খেতে হবে, যেসব খাবার আমাদের সুস্থ রাখবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ার বিকল্প নেই। আর সেজন্য খাবার তালিকায়ও দিতে হবে বাড়তি মনোযোগ। এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো গ্রহণ করলে বার্ধক্য প্রক্রিয়া যেমন ধীর করা যাবে তেমনি সুস্থ থাকবে দেহ। 

বয়স বাড়ার সঙ্গে মানুষের চেহারায় আসে পরিবর্তন। বার্ধক্য যত এগিয়ে আসে মানুষজন তত বেশি রোগাক্রান্ত হয়। তবে কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে বার্ধক্যের প্রক্রিয়া ধীর করা যায় এবং সুস্থ থাকা যায়।

নিউ ইয়র্কয়ের পুষ্টিবিদ লরেন মানাকারের মতে, বয়সের সঙ্গে পুষ্টির চাহিদা পরিবর্তিত হয়। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু ‘সুপারফুড’ গ্রহণ করার মাধ্যমে বয়স বাড়লেও সুস্থ জীবনযাপান করা সম্ভব। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দেহে কোলাজেনের উৎপাদন কমে যায়। ফলে ত্বক কুঁচকে যেতে থাকে, বলিরেখা পড়তে শুরু করে। খাদ্যতালিকায় কোলাজেনসমৃদ্ধ খাবার থাকলে তা বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে।

টমেটো
টমেটোতে প্রচুর লাইকোপিন থাকে, যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের কোলাজেন ভেঙে দেয়। ফলে বলিরেখা পড়ে।

ডিম
ডিম হলো মূল ও প্রয়োজনীয় খাবার, যা শরীরকে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের যোগান দেয়। সকালের নাস্তায় অবশ্যই ডিম রাখুন। আপনার প্রোটিনের ঘাটতি মেটাবে ডিম।

কাঠবাদাম

পিনাট, কাজু, আমন্ড, ওয়ালনাটের মতো বাদাম এবং কুমড়া, শিয়া, ফ্ল্যাক্স এবং সূর্যমুখীর বীজের মতো খাবার প্রোটিনের অনবদ্য উৎস। তবে এই বীজগুলো গরম করবেন না বা রোস্ট করবেন না। কারণ এর ফলে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড নষ্ট হয়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত
কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই, সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। ভিটামিন-ই ভিটামিন সি'য়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কোলাজেন তৈরি করে। আর সেজন্য ৩০ বছর বয়সের পর নিয়মিত পাঁচ-ছয়টি করে কাঠবাদাম খাওয়া উচিত। পিনাট, কাজু, আমন্ড, ওয়ালনাটের মতো বাদাম এবং কুমড়া, শিয়া, ফ্ল্যাক্স এবং সূর্যমুখীর বীজের মতো খাবার প্রোটিনের অনবদ্য উৎস। তবে এই বীজগুলো গরম করবেন না বা রোস্ট করবেন না। কারণ এর ফলে প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড নষ্ট হয়ে যায়।

ওটস
ওটসে প্রোটিন ও ফাইবার অত্যন্ত বেশি। ফাইবার পরিপাক হতে সময় নেয়। ফলে পেট অনেকক্ষণ ভর্তি আছে, এরকম অনুভূতি হয়।

স্যামন
সুপার ফুডের তালিকার মধ্যে স্যামন মাছও আছে। চর্বিহীন প্রোটিনের দারুণ উৎস হল স্যামন মাছ। পেশির ক্ষয় প্রতিরোধ করতে চর্বিহীন প্রোটিন জরুরি। বিশেষ করে যারা বয়স্ক তাদের জন্য এটি খুবই উপকারী। এছাড়াও উচ্চা মাত্রায় ‘ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস’ সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমাতে পারে এই মাছ।

রসুন ও কাঁচা হলুদ
রসুন উচ্চ সালফারযুক্ত মসলা, যা কোলাজেনের ভেঙে যাওয়া রোধ করে। আর হলুদকে বলা হয় পাওয়ার হাউস বা শক্তিঘর। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানি দিয়ে কয়েক টুকরো কাঁচা রসুন ও হলুদ খেলে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে, ত্বকও মসৃণ থাকে।

থাইরয়েড সুস্থ রাখবে যেসব খাবার

সবুজ সবজি
সবুজ সবজি যেমন পাতাকপি ও পালংশাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন ই এবং কে। যা স্মরণশক্তি লোপ পাওয়ার হাত থেকে বাঁচায় ও মস্তিষ্কের বয়স্ক হওয়া ধীর করে। এছাড়াও এই ধরনের সবুজ সবজিতে রয়েছে ক্যারোটিনয়েডস, যা অক্সিডেটিভ ক্ষতির হাত থেকে চোখ বাঁচায়। বিশেষ করে পালংশাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ এবং সি। এসব উপাদান হৃদযন্ত্রকেও রক্ষা করে।

ব্রকলি 
ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে। যা শরীর থেকে কোলেস্টেরল বের করে দেয়। এতে সব শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা অনেক গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করে। ব্রকলি একটি প্রাকৃতিক ডেটক্স যা পেট এবং পাচনতন্ত্র পরিষ্কার রাখে। শরীরে কোলাজেন তৈরির একটি দারুণ উৎস ব্রকলি।

একটি সমাজের সর্বাঙ্গীণ অবস্থার ওপর ওই সমাজের সদস্যদের পুষ্টির মান নির্ভরশীল। জন্মের পর মানুষের প্রথম প্রয়োজন খাদ্য। এ খাদ্যই পুষ্টির বাহক। শরীরে কোলাজেনের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কলিজা, কোকো পাউডার, ডার্ক চকলেটও খেতে পারেন। সেই সঙ্গে জীবনযাত্রায় আনতে হবে একটু পরিবর্তনও। তেল, চর্বি, ভাজা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। খাবারে অতিরিক্ত চিনি, লবণ বাদ দিন।


সর্বশেষ সংবাদ