স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

পাবলিক বিশ্ববিধ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ শুরু হচ্ছে শিগগিরই
পাবলিক বিশ্ববিধ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ শুরু হচ্ছে শিগগিরই  © ফাইল ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির বিষয়ে নিজের কথা দিয়েই শুরু করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি হওয়ার আগে যে খুব আহামরি প্রস্তুতি ছিল তা নয়। প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েক ঘণ্টা করে পড়েছি, তবে খুব বেশি নয়। কোচিংয়ের ক্লাসগুলো নিয়মিত করতাম। তবে কোচিংয়ের পরীক্ষায় শতাধিক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মধ্যে আমার অবস্থান থাকতো ৫০-এরও ওপরে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেভাবে ভর্তি পরীক্ষা হয়, সেই নিয়মে নেওয়া কোচিংয়ের পরীক্ষায় এভাবে পিছিয়ে থাকা মানে চান্স না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমার মধ্যে এমন একটি ধারণা তৈরি হয়েছিল। তবে আমার সেই বিশ্বাস বদলে দিয়েছিলেন কয়েকজন শিক্ষক আর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বড় ভাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগেই তাদের সান্নিধ্য পাওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার।

তারা আমাকে বলেছিলেন, ভর্তি পরীক্ষায় টিকে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতিটা খুব জরুরি। তবে তারচেয়ে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তারা আমাকে বলেছিলেন, সেটি হলো, ‘আত্মবিশ্বাস’। এটি থাকলে প্রস্তুতিতে কিছুটা ঘাটতি থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণ সম্ভব। এটিই আসলেই আমার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে বড় ভূমিকা রেখেছিল।

দেখা যায়, অনেকে কোচিং কিংবা মডেল টেস্টে ভালো ফল না করতে পেরে আশা হারিয়ে ফেলেন। তারা ভাবেন, আমার চান্স পাওয়া হবে না। বাস্তবতা তা নয়। কোচিংয়ের পরীক্ষায় সাধারণত একটু জটিল বা কঠিন টাইপের প্রশ্ন করা হয়। ফলে নম্বর তোলা কঠিন।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কোচিং বা মডেল টেস্টের মতো নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন করা হয় অনেক দিক বিবেচনা করে। ফলে প্রশ্ন তেমন জটিল হয় না, মানসম্মত হয়। সে কারণে কোচিং বা মডেল টেস্টের প্রশ্নে হতাশ না হয়ে প্রস্তুতি ভালোভাবে চালিয়ে যাওয়াটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

আরও একটি বিষয় হলো পরীক্ষার আগে অনেকে ঘাবড়ে যান। কি প্রশ্ন আসবে? কেমন পরীক্ষা নেবে? আমি চান্স পাব তো? মাথায় এমন নানা ধরনের প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। পরীক্ষার আগে এসব চিন্তা বাদ দিন। শুধু আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে, যে প্রশ্নই আসুক পারব।

আর বিশ্ববিদ্যালয় তো একটি নয়। এখন অনেক ভালো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। একটিতে না হলে আরেকটিতে হবে। ঘাবড়ে যাওয়ার কি আছে? এভাবে যদি মনটাকে পরীক্ষার আগে ফ্রেশ রাখা যায় তাহলে সাফল্য ধরা দেবেই। আমার ক্ষেত্রে এ কাজটিই হয়েছিল। পরীক্ষার দিন নিজের মনমানসিকতা খুব স্বাভাবিক থাকা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে বড় ভূমিকা রেখেছিল। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরীক্ষাটা দিতে পেরেছিলাম।

প্রস্তুতি না থাকলেও দ্বিতীয়বারও ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চান্স পেয়েছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে প্রথমবারের চান্স পাওয়া বিষয়ে শেষ পর্যন্ত পড়াশোনা শেষ করেছি। এখানে বলে রাখা ভালো, আমাদের সময়ে দুইবার ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিল। এখন সে সুযোগ বন্ধ হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিযুদ্ধ শুরু হচ্ছে আর কয়েকদিন পর। এখন প্রতিটি দিন, প্রতিটি মিনিট গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তুতিটা ভালোভাবে নিলে আর আত্মবিশ্বাস রাখলে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব। শুভ কামনা সবার জন্য।

লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী


সর্বশেষ সংবাদ