ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে উপকারী যেসব ফল
সুস্থ জীবনযাপনের জন্য প্রথম শর্ত শরীরকে রোগমুক্ত রাখা প্রয়োজন। শরীর যদি রোগমুক্ত থাকে তাহলেই আপনি সুন্দর জীবনযাপন করতে পারবেন। ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়া এমন একটি সমস্যা যাতে শরীর অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শোষণ করতে পারে না এবং এটি স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং খাদ্যাভাসের কারণে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ এই সমস্যায় কষ্ট পাচ্ছেন। প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার কারণে গাঁটের ব্যথায় শয্যাশায়ী হয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
মানুষের দেহে অন্যতম উপাদান হচ্ছে ইউরিক অ্যাসিড। কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন দিয়ে তৈরি এই যৌগ আমাদের খাবার হজমে সহয়তা করে। শরীরের পিউরিন নামে অর্গান ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করার মূল কারিগর। তবে শরীরের জন্য ইউরিক অ্যাসিডের যেমন ভালো দিক রয়েছে, তেমনি শরীরের ওপর এর বাজে প্রভাবও রয়েছে। তাই শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
পিউরিনের পরিমাণ যদি শরীরে বেশি হয় তাহলে অ্যাসিডের মাত্রাও বেড়ে যায়। এ সময় অস্থিসন্ধিতে ইউরিক অ্যাসিডের স্ফটিক বা ক্রিস্টাল জমা হলে শরীরে হাঁটু, হাত-পায়ের আঙুল ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ব্যথা হওয়ার মতো সমস্যা হয়ে থাকে।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে আনা বা কমানোর জন্য চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। সাধারণ খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চললেই ইউরিক অ্যাসিড কমানো সম্ভব।
চেরি: চেরিতে অ্যান্থোসায়ানিন নামক প্রাকৃতিক প্রদাহরোধী উপাদান রয়েছে। যা নিয়মিত খাওয়ার ফলে ইউরিক অ্যাসিডেমের মাত্রা হ্রাস পায়। এই ফল শরীরের জয়েন্টে স্ফটিক জমা হওয়া থেকে দূরে রাখে।
কলা: ইউরিক অ্যাসিডের কারণে যদি বাতজনিত ব্যথা হয় তাহলে প্রতিদিন একটি করে কলা খেতে পারেন। নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিড কম হতে পারে। এতে বাতব্যথার আক্রমণের ঝুঁকি কমে।
কিউই: কিউই খেলে স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার পাওয়া যায়। এই ফল শুধু ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে না, শরীরকে বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্ত করে। এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ফোলেট এবং পটাশিয়ামও ভালো পরিমাণে পাওয়া যায়।
অ্যাভোকাডো: এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে। অ্যাভোকাডো ফল একটি প্রদাহরোধী। নিয়মিত খাওয়ার ফলে বাতব্যথা প্রতিরোধে উপকার পাওয়া যায়।
কমলা: বেশিরভাগ সাইট্রাস ফল ইউরিক অ্যাসিড কমাতে কার্যকর প্রমাণিত, কমলাও সেই ফলগুলির মধ্যে একটি। এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সহায়ক। এর প্রভাব ইউরিক অ্যাসিড কমাতেও দেখা যায়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কমলা খাওয়ার পাশাপাশি এর জুসকেও ডায়েটের অংশ করতে পারেন।
আরও পড়ুন: ডায়েট ছাড়াই ওজন কমানোর উপায়
সাইট্রাস ফল: অধিকাংশ সাইট্রাস ফল ইউরিক অ্যাসিড কমাতে ভালো উপকারে আসে। কমলা এবং লেবুর মতো ফল ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিডের উৎস। এসব ফল খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরে স্বাস্থ্যকর ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বজায় রাখতে দারুণ কাজে আসে।
আপেল: ডায়েটারি ফাইবার সমৃদ্ধ আপেল ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। স্বাভাবিকভাবে ফাইবার রক্ত প্রবাহ থেকে ইউরিক অ্যাসিড শোষণ করে এবং শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড দূর করে থাকে। এ কারণে জুস করে বা গোটা আপেল খাওয়া যেতে পারে