শীতকালে সুস্থতায় যে খাবারগুলো বেশি খাবেন

শীতে যে খাবারগুলো বেশি খাবেন
শীতে যে খাবারগুলো বেশি খাবেন  © সংগৃহীত

শীতের শুরুর দিকে দেহের চামড়ায় রুক্ষতা দেখা দেয়। তার সঙ্গে অনেকের আবার আবহাওয়া বদল মানেই সর্দি, কাশি, জ্বর। তাই শীতে সুস্থ থাকতে প্রয়োজন বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান। যা খেলে শরীর সুস্থ ও সতেজ থাকবে। এসময় বাজারে পাওয়া যায় অনেক তাজা শাক-সবজি। 

আবহাওয়াজনিত কারণে এ সময় মানুষের নানা ধরনের অসুখ হয়। এসব থেকে বাঁচতে অনেকেই চলে যায় ডাক্তারের কাছে। তবে শীতকালে খাদ্যাভ্যাসে নিয়মকানুন ঠিক রাখলেই সুস্থ থাকা যাবে। শীতে অসুস্থ হওয়া ঠেকাতে পারে শীতের কিছু সবজি, যা খেলে তরতাজা থাকবেন। 

বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাইরে থেকে যত্নের পাশাপাশি চাই ভেতর থেকে সুস্থতা। শীতে যেসব খাবার সজীবতা ও সুস্থতা দেবে: 

স্যুপ: শীতে শরীর সুস্থ রাখতে স্যুপ বা ঝোল দারুণ উপকারী। শীতেই মেলে স্যুপের আসল মজা। ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় গরম-গরম স্যুপ। শীতের বিকেলে বা রাতের খাবারে ধোঁয়া ওঠা এক বাটি স্যুপ হলে মন্দ হয় না। এতে শরীর থেকে একটু হলেও কাটবে ঠান্ডার রেশ। শরীর সুস্থ রাখতে শীতের সময় নানা সবজি আর মুরগির মাংস বা ডিম দিয়ে বানিয়ে খেতে পারেন স্যুপ।

মূলজাতীয় সবজি: শীতের রোগবালাই দূর করতে এ মৌসুমের মূলজাতীয় সবজি দারুণ কার্যকর। বিট, মিষ্টি আলু, গাজর, শালগমের মতো নানা সবজি শীতে আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। এসব সবজিতে থাকা ভিটামিন ও নানা পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। এগুলো ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এসব সবজি শীতকালে দেহের উষ্ণতা বাড়াতে সাহায্য করে।

টক ফল: শরীরে ফাইবার বা আঁশের ঘাটতি মেটাতে ও ভিটামিন ‘সি’র জোগান দিতে শীতের সময় বেশি করে টকজাতীয় ফল খেতে পারেন। কমলা, বরই, পেয়ারা হতে পারে ভিটামিন ‘সি’র দারুণ উৎস। পেয়ারায় আরও অনেক বেশি ভিটামিন ‘সি’ থাকে, যা অনেক বেশি প্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে আরও থাকে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম।

দুধ: ভিটামিন বি৬-এর অন্যতম ভালো উৎস হলো দুধ। তরল দুধ পান করতে পারেন অথবা প্রতিদিনের নাস্তার সঙ্গেও যোগ করতে পারেন। দুধের সঙ্গে ওটস বা কর্নফ্লেক্স মিশিয়ে খেতেও ভালো লাগবে। পুষ্টিকর এই খাবার সব বয়সীদের জন্যই উপকারী। বিশেষ করে বয়স্কদের খাবারের তালিকায় দুধ রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার খেলে যদি কোনো ধরনের সমস্যা হয়, তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

ডিম: শীতের সময়ে ডিম খেলে তা কেবল আমাদের ভেতর থেকে উষ্ণই রাখে না, সেইসঙ্গে এটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকরও। ডিমের অমলেট কিংবা সেদ্ধ ডিম খেতে পারেন। প্রতিদিন একটি করে ডিম খেলে মিলবে অনেক রকম উপকারিতা। এটি সকালের নাস্তায়ও একটি ভালো খাবার হিসেবে কাজ করে।

আরও পড়ুন: শীতে ত্বকের যত্নে গ্লিসারিন ব্যবহারের নিয়ম

মুরগির কলিজা: মুরগির কলিজা খেতে ভালোবাসেন অনেকেই। এই খাবার শীতের সময়ে আপনার জন্য আরও বেশি উপকারী হয়ে উঠবে। ভিটামিন বি৬ ছাড়াও এতে আছে প্রচুর ফোলেট ও আয়রন। এই খাবারের আছে অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা।

কলা: ওজন কমানোর চেষ্টা করলে প্রতিদিন একটি করে কলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। ভিটামিন বি৬-এর পাশাপাশি কলায় থাকে বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার। তাই শীতের এই সময়ে উপকারী একটি খাবার হতে পারে কলা।

মাছ ও শিম: শীতে বেশি করে মাছ খান। আমিষের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন দুই বেলা মাছ খান। খাবারে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন সামুদ্রিক মাছ রাখুন। এ ছাড়া মাছের সঙ্গে শিম যুক্ত করে খেতে পারেন। মাছের ঝোলে শিম মানিয়ে যায়। ভর্তা হিসেবেও অনন্য। শিম শুধু রসনাবিলাসই করে না, তার অন্য গুণও আছে।

গাজর: ভিটামিন বি৬ সমৃদ্ধ গাজর শীতের মৌসুমে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। একটি মাঝারি মাপের গাজরে এক গ্লাস দুধের চেয়েও বেশি ভিটামিন বি৬ থাকে। সেইসঙ্গে গাজরে থাকে প্রচুর ফাইবার ও ভিটামিন এ। তাই এসময় অসুখ-বিসুখ থেকে বাঁচতে নিয়মিত গাজর খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

পালং শাক: সবুজ পাতাযুক্ত এই শাকে আছে আয়রন, ফোলেট ও পটাশিয়াম। শীতের এই মৌসুমে উপকারী এই শাক আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখতে চেষ্টা করুন। এতে শরীর সুস্থ রাখা সহজ হবে।

মটরশুঁটি: শীতের সময়ের আরেকটি সহজলভ্য সবজি হলো মটরশুঁটি। মটরশুঁটিতেও থাকে প্রচুর ভিটামিন বি৬। এই সবজি খেলে পাওয়া যায় আরও অনেক উপকারিতা। সালাদের সঙ্গে রাখতে পারেন এটি। কিংবা আলু, গাজরের সঙ্গে ভেজেও পরিবেশন করা যায়। সেদ্ধ মটরশুঁটি আরও অনেক খাবার তৈরিতে ব্যবহার করতে পারেন।


সর্বশেষ সংবাদ