শীতে গলা ব্যথা দূর করতে যা করনীয়
শীতকাল আসলেই ঘরে ঘরে দেখা দেয় সর্দি-কাশি, ঠান্ডা-জ্বরের সমস্যা। তবে সব থেকে বেশি যে সমস্যা হয় তা হলো শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠলেই গলার ভেতরে খুব ব্যথা করে ও ঢোক গিলতে গেলেও খুব কষ্ট হয়। এটিকে তেমন গুরুত্ব না দিলেও মাঝে মাঝে এটি যে কোন বড় অসুখের উপসর্গ হয়ে দেখা দেয়। অতিরিক্ত মাথা ব্যথা করা,গলা ব্যথা মরাত্মক আকার ধারণ করা,গলার টনসিল ফুলে লালচে হয়ে যাওয়া দেখলেই বুঝবেন এটি গলা ব্যথার লক্ষন। এ ব্যথা সাধারণত টনসিলের কারণে হয়ে থাকে। যে কেউ এ সমস্যায় পড়তে পারেন।
টনসিল হলো আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি অংশ এবং আমাদের মুখের ভেতরেই চারটি গ্রুপে তারা অবস্থান করে। এদের নাম লিঙ্গুয়াল, প্যালাটাইন, টিউবাল ও অ্যাডেনয়েড। এ টনসিলগুলোর কোনো একটির প্রদাহ হলেই তাকে বলে টনসিলাইটিস। টনসিল বলতে আমরা সচরাচর যা বুঝি, তা কিন্তু আসলে টনসিলাইটিস। টনসিলাইটিস যে শুধু শিশুদের হয়, তা নয়। এটা শিশুদের বেশি হলেও যেকোনো বয়সেই হতে পারে।
আসুন জেনে নিই টনসিলের সমস্যা দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায়:
লবণ পানি: গলাব্যথা শুরু হলে সামান্য উষ্ণ লবণ পানি দিয়ে গড়গড়া করুণ। লবণ পানি টনসিলের সংক্রামণ রোধ করে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, উষ্ণ পানি দিয়ে গড়গড়া করলে গলায় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামণের আশঙ্কাও অনেক কমিয়ে দেয়।
সবুজ চা আর মধু: এক কাপ গরম পানিতে আধ চামচ সবুজ চা পাতা আর এক চামচ মধু দিয়ে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এবার ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে ওই চা পান করুন। সবুজ চায়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা সব রকম ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করে। দিনে ৩ থেকে ৪ কাপ এই মধু-চা পান করুন।
লেবুর রস: লেবুলেবু শরীরের টক্সিন দূর করতে খুব উপকারী। তাই টনসিলে সংক্রমণ হলে বা গলায় ব্যথা হলে হালকা গরম পানিতে এক চামচ লেবুর রস, এক চামচ মধু ও সামান্য লবণ ভালো করে মিশিয়ে নিন। লবণ অ্যান্টি সেপটিক। তাই শরীরের অভ্যন্তরের সংক্রমণে লবণ খুব কার্যকর। এই মিশ্রণটি সেবন করুন। টনসিলের সমস্যা কমবে সহজে।
আরও পড়ুন: যেসব উপায়ে শীতেও মসৃণ থাকবে ঠোঁট
হলুদ: হলুদ টিস্যুকে প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। তাই গলার ব্যথা কমাতে অনেকেই ঘরোয়া উপায়ে এর ব্যবহার করেন। সে ক্ষেত্রে এক কাপ দুধে সামান্য হলুদ মেশান। তার পর সেই দুধ ফুটিয়ে গরম গরম খান। এই হলুদ মেশানো দুধ টনসিলের সংক্রমণ বা গলাব্যথার ক্ষেত্রে খুব কার্যকর।
আদার চা: গলা ব্যথার সমস্যায় আদা চা ভীষণ উপকারী। এক্ষেত্রে আদার মধ্যে রয়েছে নানা কার্যকরী উপাদান। এছাড়া চায়ের উপকারের কথাও ভুলে গেলে চলবে না। এর মধ্যেও এমন কিছু ভালো উপাদান রয়েছে যা বহু সমস্যার করতে পারে সমাধান। তাই এই সমস্যা সমাধানে পান করুন আদা চা।
রসুন: রসুন অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত এবং গলা ব্যথা নিরাময়ে সহায়তা করে। রসুনের মধ্যে থাকা অ্যালিসিন গলা ব্যথার কারণ ব্যাকটিরিয়াকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে। এটি ‘কাঁচাও খাওয়া যায় এবং রান্না করেও খাওয়া যায়।
লবঙ্গ: মাঝে মাঝেই মুখে দুটি লবঙ্গ রাখুন এবং সেগুলি নরম হওয়ার পর চিবিয়ে গিলে ফেলুন। এটি কার্যকরভাবে গলা ব্যথা নিরাময়ে সহায়তা করে।
আদা: আদা-য় প্রচুর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বিদ্ধমান তার জন্য এটি গলা ব্যথা সারাতে সহায়তা করে। পানিতে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে এটি প্রায় ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে দিনে দু’বার এই পানি পান করুন কম করে হলেও। এর সাথে এক চা চামচ মধুও যোগ করতে পারেন।