২৫ অক্টোবর ২০২২, ১১:৫১

খাওয়ার পর যে ভুলগুলো করলে বিপদ বাড়তে পারে

শরীরের সুস্থতার জন্য নিয়ম মেনে খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ  © সংগৃহীত

শরীরের সুস্থতার জন্য নিয়ম মেনে খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি খাবার পরেও নিয়ম মেনে চলা ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ খাবার পরে আমরা অজান্তেই এমন কিছু কাজ বা ভুল করি, যার মাশুল গোনে আমাদের শরীর। চিকিৎসকদের মতে, দিনের পর দিন এমন অভ্যাস বজায় রাখলে তা কিন্তু বড় অসুখের দিকে ঠেলে দিতে পারে আমাদের। অজান্তেই ডেকে আনতে পারে শরীরের রক্ত সঞ্চালনের অস্বাভাবিকতা থেকে শুরু করে, হার্টের অসুস্থতা, মেদবাহুল্য ইত্যাদি। দেখে নিন মূলত কোন কোন স্বভাবে এখনই বদল আনা প্রয়োজন।

এশিয়া মহাদেশে প্রতিদিন ভাত খাওয়া লোকের সংখ্যা সবথেকে বেশি। ভাত অবশ্যই উপকারি খাবার। কিন্তু এমন কিছু বদঅভ্যাস রয়েছে যেগুলো আমাদেরকে সুস্থ রাখার পরিবর্তে অসুস্থ করে তোলে। আর তাই সেসব অভ্যাস পরিত্যাগ করাই ভাল।

১। ভরা পেটে ফল খাওয়ার প্রবাদকে মনে রেখে ভরপেট খাওয়ার পরেই ফল খান? তাহলে এই অভ্যাসে বদল আনাই শ্রেয়। এমনিতেই ফল অ্যাসিডিক। ভরপেট খাওয়ার পরেই ফল খেলে শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়। তাই খাওয়ার প্রায় এক-দুই ঘণ্টা পর ফল খেলে তবেই উপকার পাবেন।

২। খাবার গ্রহণের পর পরই গোসল করবেন না। কারণ খাওয়ার পরপরই গোসল করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে পাকস্থলির চারপাশের রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায়। যা পরিপাকতন্ত্রকে দুর্বল করতে পারে। ফলে খাবার হজমের স্বাভাবিক সময়কে ধীরগতি করে দেয়।

৩। ভরা পেটে শরীরচর্চা করার স্বভাব থাকলে সে অভ্যাস ছাড়ুন। অনেকেই আছেন যারা জিমে যাওয়ার আগে প্রাতরাশে ভরপেট খাবার খান। এতে উপকার তো হয়ই না, উল্টো শরীরকে কষ্ট দেওয়ার পাশাপাশি হজম প্রক্রিয়াকেও ব্যাহত করে।

আরও পড়ুন: নারীদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে যেসব কারণে

৪. হাঁটা চলা করবেন না! অনেকেই বলে থাকেন যে , খাবার পর ১০০ কদম হাটা মানে আয়ু ১০০ দিন বাড়িয়ে ফেলা! কিন্তু আসলে বিষয়টা পুরোপুরি সত্য নয়। খাবার পর হাঁটা উচিত, তবে অবশ্যই সেটা খাবার শেষ করেই তাৎক্ষণিকভাবে নয়। কারণ এতে করে শরীরের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ অক্ষম হয়ে পড়ে।

৫. অনেকে দেখা যায়, খাবার গ্রহণের সময় বা পরপরই কোমড়ের বেল্ট কিংবা কাপড় ঢিলা করে দেয়। এটা ঠিক নয়। কারণ কোমরের বেল্ট বা কাপড় ঢিলা করলে খুব সহজেই ইন্টেসটাইন (পাকস্থলি) থেকে রেক্টাম (মলদ্বার) পর্যন্ত খাদ্যনালীর নিম্নাংশ বেঁকে যেতে পারে। এমনকি পেঁচিয়ে বা ব্লক হয়ে যেতে পারে। এ সমস্যাকে ইন্টেসটাইনাল অবস্ট্রাকশন বলে। 

৬. খেয়ে উঠে ঘুমিয়ে পড়াও ভালো অভ্যাস নয়। এতে মেদ জমার সম্ভাবনা বাড়ে। বরং খাওয়ার পর অল্প হাঁটাহাঁটি করুন। এতে খাবারকে পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছাতে সাহায্য করাও হবে, আবার তাকে হজমের উপযুক্ত করে তুলতে পারবেন।

৭. অনেককে দেখা যায় খাওয়ার পরেই ধূমপান শুরু করেন। এমনিতেই ধূমপান করা একেবারেই উচিত নয়। তার উপর অন্য সময় ধূমপান শরীরের যে পরিমাণ ক্ষতি করে, খাওয়ার পর ধূমপান করলে সে ক্ষতি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। কারণ ওই সময় শরীরের বিপাকক্রিয়া শুরু হয়, তখনই তামাকের ধোঁয়া শরীরে গেলে তা আরও বেশি বিপজ্জনক। 

৮. খাবার পরেই অনেকে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে বসে যান। চায়ে থাকে প্রচুর পরিমাণ টেনিক এসিড যা খাদ্যের প্রোটিনকে ১০০ গুণ বাড়িয়ে তোলে। এতে খাবার হজম হতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগে। তাই কিছু সময় অপেক্ষা করার পর চা পান করুন।