অল্পতেই রেগে যাচ্ছেন? জানুন সমাধান

রাগ মানুষের আচরণের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ
রাগ মানুষের আচরণের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ  © সংগৃহীত

রাগ মানুষের আচরণের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। কেউ কেউ আছেন অল্পতেই রেগে যান। আবার অনেকে আছেন যারা রাগ প্রকাশ করেন না। যতই খারাপ লাগুক না কেন তারা মনের মধ্যে রাগ চেপে রাখেন। তবে আপনার যদি অল্পেই রেগে যাওয়ার স্বভাব থাকে, তবে আগে থেকেই একটু সাবধান হোন। 

তবে মনোবিজ্ঞানীরা এটাকে স্বাভাবিক আবেগ বললেও রাগ ক্ষতির কারণ হতে পারে। যার প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিজীবন, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে। এমনকি স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে দেখা যায়। কেননা রাগের মাথায় নেয়া কোন সিদ্ধান্ত ভালো কিছু বয়ে আনে না। তাই রাগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরী। এ পর্যায়ে রাগ হলে করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরা হলো-

মনোযোগে পরিবর্তন আনা

যখন কোন জিনিস কিংবা ব্যক্তি নিয়ে প্রচন্ড রাগ হবে, তখন সেই বিষয়টি থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা। ফলে রাগ অনেকটা কমে যাবে। কেননা, মনোবিজ্ঞানদের মতে, কোন কিছু রাগের কারণ হলে সেই বিষয়টি থেকে কিছুক্ষণের জন্য নিজেকে বিরত রাখলে রাগ অনেকটা কমে যায়।

কথা বলা বন্ধ রাখা

কারো সাথে কোন বিষয় নিয়ে রাগান্বিত হলে, সেই সময় নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য কথা বলা বন্ধ রাখা।কেননা কথা বললেই রাগ বাড়তে পারে। তাই নিজেকে শান্ত করতে স্থান পরিবর্তন করে একটু হেঁটে আসা কিংবা অন্য কোন কাজে মনোযোগ দিলে রাগ অনেকটা কমে যায়। 

চাপা ক্ষোভ শেয়ার করা

নিজের মধ্যে অনেক চাপা ক্ষোভ বহুদিন পুশে রেখে অনেকে নিদারুণ যন্ত্রণা সহ্য করে। যার ফলে এই রাগ শারীরিক ক্ষতির কারণ হয়। তবে এই পুশে রাখা রাগ কারো কাছে শেয়ার করলে নিজেকে অনেকটা হালকা অনুভূত হয়। তাই চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করুন।

হাসিখুশি থাকা

কোন কাজে মনোযোগ হচ্ছে না বলে রাগে সবকিছু তছনছ করতে হচ্ছে হচ্ছে। তবে নিজেকে সেই কাজ থেকে একটু বিরত রাখুন। হাসির কোন ভিডিও দেখুন কিংবা মজার কোন গল্প পড়ুন। এমনকি পছন্দের কোন যায়গায় যাওয়া অথবা কারো সাথে মন খুলে কথা বলতে পারেন। দেখবেন মেজাজ ভালো হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন: চোখের রোগ ইউভাইটিস হলে করণীয়

ক্ষমার মানসিকতা 

ক্ষমা মহৎ গুণ। তাই রাগ হলেই কারো সাথে এমন অবিচার করা সমীচীন নয়, যা পরবর্তীতে আপনাকে অনুশোচনা করায়। তাই কারো উপর রাগ হলে ক্ষমা করার মানসিকতা দেখাতে হবে। ফলে রাগ অনেকটা কমে যাবে। 

রাগ নিয়ন্ত্রণে ইসলামি শিক্ষা 

ইসলামে রাগ নিয়ন্ত্রণের চারটি উপায়ের  কথা বলা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- চুপ থাকা, ওজু করা, রাগ হলে বসে পড়া অথবা মাটিতে শুয়ে পড়া এবং তাউজ (আউজুবিল্লাহ) পড়া।

বুখারি ও মুসলিম শরীফে উল্লেখ রয়েছে রাসূল (স.) বলেছেন, ‘রাগ বা ক্রোধ শয়তানের তরফ থেকে আসে। শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুনকে পানি ঠাণ্ডা করে দেয়। যদি কারো ক্রোধ বা রাগ আসে তবে তার উচিত ওজু করে নেয়া।’ 

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত  রাসুল (স) বলেছেন, ‘তোমরা শিক্ষা দাও এবং সহজ করো। কঠিন কোরো না। যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো; যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো; যখন তুমি রাগান্বিত হও তখন চুপ থাকো।’ (মুসনাদে আহমাদ)

অন্য হাদিসে নবি করিম (স) ইরশাদ করেছেন, ‘যদি দাঁড়ানো অবস্থায় কেউ রাগান্বিত হয় তবে সে যেন বসে যায়। এতেও যদি রাগ না কমে তবে সে যেন (মাটিতে) শুয়ে পড়ে।’ (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, মিশকাত)

হজরত সুলাইমান ইবনু সুরাদ (রা) থেকে বর্ণিত রাসুল (স) বলেছেন, (রাগের সময়) এই কথাগুলো (আউজু বিল্লাহি মিনাশ শাইত্বানির রাঝিম) বললে রাগান্বিত ব্যক্তির রাগ দূর হয়ে যাবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)


সর্বশেষ সংবাদ