সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা সমাজের ডাক্তার, চাকরির সুযোগও প্রশস্ত
সমাজবিজ্ঞান মানবীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিকের আলোচনায় ব্যাপ্ত থাকে। সমাজ বা দলের বৈজ্ঞানিক আলোচনা বিজ্ঞান হলো সমাজবিজ্ঞান। সমাজবিজ্ঞানের জ্ঞান একজন শিক্ষার্থীকে এমনভাবে প্রস্তুত করে; যাতে সে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির মনো- সামাজিক সমস্যা দূর করেতে সমর্থ হন।
যে কারণে সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা সমাজের ডাক্তার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন এবং সমাজকর্মী হিসেবে পেয়ে থাকেন বিশেষ মর্যাদা।
সামাজিক সেবা প্রদান, পরিচালনা, উন্নয়নশীল নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করার সুযোগ হয় সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের। কাজের মাধ্যমে সমাজকর্মী হিসেবে দেশে- বিদেশে সমাদৃত হন তারা। কেউ কেউ পেয়ে যান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খ্যাতি। কাজের সুবাদে ঘুরে বেড়াতে পারেন পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে।
এ বিষয়ে পড়াশুনা শেষে আছে বিভিন্ন কর্মের হাতছানি। সমাজবিজ্ঞানে ডিগ্রীধারী শিক্ষার্থীদের রয়েছে সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পাশাপাশি দাতব্য এবং অন্যান্য বেসরকারি সংস্থায় পেশাগতভাবে কাজ করার সুযোগ।
এছাড়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক, দেশি ও স্থানীয় এনজিওগুলোর বিভিন্ন বিভাগে চাকরির সুযোগ পেয়ে থাকেন।
কাজের ধরন
* মানবসম্পদ উন্নয়ন, গবেষণা, উন্নয়ন, প্রোগ্রাম, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিভাগ। এছাড়া সোশ্যাল গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অধীনে গবেষক, সহকারী গবেষক, মাঠ গবেষণা পর্যবেক্ষক, পর্যবেক্ষক, গবেষণা পদ্ধতি উন্নয়নকারী, তথ্য সংগ্রহকারী এবং গবেষণা প্রতিবেদক হিসেবেও কাজ করতে পারেন।
* একজন সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে যেমন ইউএনডিপি, ইউনেসকো, ইউনিসেফে চাকরি করে আন্তর্জাতিক স্কেলে বেতন পেয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: ‘উন্নয়ন অধ্যয়ন’ আন্তর্জাতিক মানের বিষয়, বিদেশে ব্যাপক কদর-চাহিদা
এরপরেও সমাজবিজ্ঞান বিষয় নিয়ে অনেকের বিপরীত মনোভাব রয়েছে। তারা জানতে চায়, ‘সমাজবিজ্ঞান পড়লে চাকরির ক্ষেত্র কেমন?’
সমাজকে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে জানার জন্য সমাজবিজ্ঞান একটি অসাধারণ ক্ষেত্র। সমাজবিজ্ঞান পড়ে ক্যারিয়ার গড়ার অনেক সুযোগ আছে। প্রথমে বিসিএসসহ প্রায় সকল সরকরি চাকরির দুয়ার খোলা, বিসিএসে অন্যান্য সাবজেক্টের তুলনায় সমাজবিজ্ঞানের স্টুডেন্টসদের টিকতে বেশি দেখা যায়। এছাড়া রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল সরকারি ব্যাংকে চাকরির সুযোগ।
যারা স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশ যেতে চায়, তাদের জন্য অনেক ভালো সুযোগ আছে সমাজবিজ্ঞানে। সেক্ষেত্রে দরকার ভালো সিজিপিএ, ভালো IELTS স্কোর এবং দু’একটি রিসার্চ পাবলিকেশন। এ ধরনের গবেষণা প্রতিবেদন থাকলে সম্ভাবনা আরো বেড়ে যাবে।
দেশি-বিদেশি এনজিওতে এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে সমাজবিজ্ঞানের স্টুডেন্টদের ভালো চাকরির সুযোগ রয়েছে। সেক্ষেত্রে কম্পিউটার এবং ইংরেজিতে ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। গবেষণার জ্ঞানও অনেক কাছে আসবে।
এর সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারলে সেটি অনেক কাজে দেয়। কেউ যদি শিক্ষকতায় আসতে চায় তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি কলেজ, প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভালো সুযোগ আছে।
লেখক: শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, বশেমুরবিপ্রবি