৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:১১

‘উন্নয়ন অধ্যয়ন’ আন্তর্জাতিক মানের বিষয়, বিদেশে ব্যাপক কদর-চাহিদা

লোগো  © টিডিসি ফটো

‘উন্নয়ন অধ্যয়ন’ বিষয়টি নিয়ে সবার জ্ঞানের পরিধি হয়ত একটু কম। উন্নয়নের এই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুগোপোযোগী একটা বিষয় হচ্ছে উন্নয়ন অধ্যয়ন। এটা আন্তর্জাতিক মানের সাবজেক্ট হওয়ায় শুধু দেশে নয়, বিদেশেও এই বিষয়ের শিক্ষার্থীদের অনেক কদর এবং চাহিদা রয়েছে।

এর প্রধান ক্ষেত্র হচ্ছে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি এবং এনজিও, জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাং, আইএমএফের মত প্ল্যাটফর্ম তো পাবেনই। পাশাপাশি সকল প্রকার জব সেক্টরে আপনাদের অবাধ বিচরণ থাকবে।

একটি রিভিউ দিয়ে যদিও একটি বিষয় সম্পূর্ণ মূল্যায়ন করা যায় না। একমাত্র ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের একজন শিক্ষার্থী জানে, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ আসলে কি...। 

১. ডিএস কেন নেবেন, কেন পড়বেন?

এটি একটি বহুমাত্রিক বিষয়। যেখানে এক জন শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক এবং বাণিজ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে পারবেন। আপনি এখানে বিভিন্ন আঙ্গিকের, বিভিন্ন রকমের বিষয়ের স্বাদ অনুভব করার সুযোগ পাবেন। এক বাক্যে এটি একটি সম্মিলিত বিষয়।

২. চাকরির ক্ষেত্র এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের মানসম্মত এনজিও যেমন UNDP, BRAC, UNICEF, WB, IMF, WHO, UNICEF, SAARC, CIRDAP, ADB, BIMSTEC এবং ব্যাংক জবগুলোতে ভালো বেতনে ভালো পদে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

অর্থনীতি: পাস করা যেখানে কষ্টের, ফার্স্ট ক্লাস সেখানে বিলাসিতা

পাশাপাশি বিসিএসের জব তো থাকছেই। আরো অনেক চাকরি পাওয়ার সুযোগ আপনার রয়েছে। পাশাপাশি নতুন বিভাগে শিক্ষক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উদাহরণ: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে হাসান আবেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন।

ভালো সাবজেক্ট নাকি বিশ্ববিদ্যালয়—কোনটি বেশি জরুরি?

৩. ডিএস আধুনিক বিষয়

বাংলাদেশের দৃষ্টিকোণ থেকে, ডিএস একটি আধুনিক বিষয়। বাংলাদেশে নতুন, তাই সব শিক্ষার্থীর রয়েছে উজ্বল ভবিষ্যৎ। কারণ বাংলাদেশ এখন আধুনিকীকরণের পথে চলেছে। আর এই আধুনিক যুগে ডিএস এক যুগান্তকারী বিষয়। তাছাড়া চাকরীর বাজারে প্রতিযোগিতা ও অনেক কম।

মাত্র ৫টি পাবলিক ইউনিভার্সিটি ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে বিএসএস অনার্স ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করে। এগুলো হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস।

সুতরাং, অবশ্যই আমরা এটি বাংলাদেশে একটি অত্যন্ত মূল্যবান ও চাহিদাসম্পন্ন বিষয় বলতে পারি। অন্যদিকে ইউরোপের দেশগুলোতে এটি সবচেয়ে দামী বিষয় হিসাবে গণনা করা হয়।

৪. ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টিকোণ থেকে

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এটি একটি নতুন বিভাগ এবং আমরা ৩য় ব্যাচ। নতুন শিক্ষার্থীদের ৪র্থ ব্যাচ হিসাবে গণ্য করা হবে; সবচেয়ে মূল্যবান এ ৪টি  ব্যাচ।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মধ্যে এটি  অন্যতম মূল্যবান বিষয় এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা সবকিছু সম্পর্কে সর্বোপরি সচেতন। বিভিন্ন ফাংশন, প্রকল্প, পরিকল্পনা, প্রোগ্রাম, খেলাধুলা এমনকি বিজ্ঞান মেলায় তাদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক এবং প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখে।

কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ সম্পর্কে এক জিনিস সত্য। আপনি সর্বদা প্রেজেন্টেশন, এসাইনমেন্ট, নিয়মিত ক্লাস, সারপ্রাইজ টেস্ট এবং একাডেমিক চাপে থাকবেন। এটি একটি সক্রিয় বিভাগ হিসাবে আপনি আর আপনার সময় নষ্ট করার সুযোগ পাবেন না।

আমাদের শিক্ষকরাও তাদের বিষয়গুলোতে খুবই দক্ষ। কেবল দক্ষই নয়, বরং যত্নশীল এবং সচেতন এবং খুব ভালো ব্যক্তিত্ব বহন করে। যা আপনাকে সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে। তাই, আমি বলবো আপনার পছন্দসই বিষয় হিসাবে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বেছে নিতে পারেন এবং একটি ডিসিপ্লিন্ড বিভাগের স্বাদ উপভোগ করতে পারবেন।

লেখক: শিক্ষার্থী, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়