২০ মে ২০২৫, ২২:৩১

প্রায় অর্ধেক তরুণ-তরুণী ইন্টারনেটবিহীন পৃথিবীকে বেছে নিতে চান

তরুণ-তরুণীদের বড় একটি অংশ ইন্টারনেটকে আর স্বস্তিদায়ক মনে করছে না  © প্রতীকী ছবি

বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের বড় একটি অংশ ইন্টারনেটকে আর স্বস্তিদায়ক মনে করছে না। তাদের মতে, পৃথিবীতে ইন্টারনেট না থাকলে তাদের জন্য আরও ভালো হতো। সম্প্রতি ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ডস ইনস্টিটিউশন (বিএসআই) পরিচালিত এক সাম্প্রতিক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

জরিপটিতে ১৬ থেকে ২১ বছর বয়সী মোট হাজার ২৯৩ জন তরুণ-তরুণী অংশ নেন। এদের মধ্যে ৪৬ শতাংশ জানিয়েছে, তারা এমন এক পৃথিবীর তরুণ হতে চান, যেখানে ইন্টারনেট নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু সময় কাটানোর পর তাদের মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে জানায় ৭০ শতাংশ। ৫০ শতাংশ তরুণ ডিজিটাল কারফিউ (একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ইন্টারনেট ব্যবহার, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া বা নির্দিষ্ট অ্যাপ ও ওয়েবসাইট ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ বা সীমাবদ্ধতা আরোপ করা) ব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়েছে, যা রাত ১০টার পর থেকে কার্যকর হবে।

জরিপে তরুণদের অনলাইন অভিজ্ঞতা নিয়েও উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। জরিপের ২৫ শতাংশ তরুণ দিনে ৪ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটান। তারা অনলাইনে কী করেন সে বিষয়ে অভিভাবকদের মিথ্যা তথ্য দিয়েছে বলে জানায় ৪২ শতাংশ তরুণ। একই শতাংশ তরুণ বলেছে, তারা ইন্টারনেটে নিজের বয়স সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। ৪০ শতাংশ তরুণ ছদ্ম অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে এবং ২৭ শতাংশ অনলাইনে সম্পূর্ণ অন্য একজনের ছদ্মবেশ ধারণ করেছে।

এদিকে এ তথ্যগুলো সামনে আসার পর টিকটক ও ইনস্টাগ্রামের মতো অ্যাপগুলো নির্দিষ্ট সময় পর ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আসার সম্ভাবনা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তিমন্ত্রী পিটার কাইল।

তবে শিশু অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ক সংগঠন এনএসপিসিসি-এর নীতিনির্ধারক রানী গোভেন্দর এ বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, ‘ডিজিটাল কারফিউ ভালো একটি উদ্যোগ হতে পারে, তবে এটি একমাত্র সমাধান নয়। শিশুরা দিনের অন্যান্য সময়েও একই ঝুঁকির মুখোমুখি হতে পারে এবং তার প্রভাব একই রকম থেকে যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের এবং প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত শিশুদের জন্য কম আসক্তিকর এবং অনেক বেশি নিরাপদ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা।’

মলি রোজ ফাউন্ডেশন নামক আত্মহত্যা প্রতিরোধে কাজ করা দাতব্য সংস্থার প্রধান নির্বাহী আন্ডি বারোজ বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যালগরিদম তরুণদের এমন কনটেন্টে নিয়ে যায়, যা খুব দ্রুত ক্ষতিকর ও উদ্বেগজনক তথ্যের দিকে ঠেলে দিতে পারে, যদিও এতে তাদের কোনো দোষ থাকে না।’

বারোজের মতে, ‘এখনই সময় হয়েছে এমন নতুন আইন প্রণয়নের, যা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে ‘সেইফ বাই ডিজাইন’পদ্ধতিতে বাধ্য করবে, যেখানে শিশুর নিরাপত্তা এবং সমাজের প্রয়োজনকে বড় প্রযুক্তি কোম্পানির লাভের চেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’