চীনে ২ কোটি মানুষ নিখোঁজ নয়, মোবাইল সিম ব্যবহারকারী কমেছে

চীনে দুই কোটির বেশি মানুষের নিখোঁজ দাবি করা খবর
চীনে দুই কোটির বেশি মানুষের নিখোঁজ দাবি করা খবর  © স্ক্রিনশট

দেশের বেশকয়েকটি সংবাদমাধ্যমে চীনের দুই কোটি ১৫ লাখ মোবাইল ব্যবহারকারী বা মোবাইলের সিমকে ‘মানুষ’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অথচ মূল সংবাদটি হচ্ছে চীনে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর গত বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দুই কোটির বেশি মোবাইল ব্যবহারকারী কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ গত বছরের ২৩ মার্চ “চায়না’স মোবাইল ক্যারিয়ারস লস ২১ মিলিয়ন ইউজারস এজ ভাইরাস বাইটস’’ শিরোনামে এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনে করোনাভাইরাসের আক্রমণের পরপর দেশটির সবচেয়ে বড় তিনটি মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে দুই কোটি ১০ লাখের বেশি গ্রাহক হারিয়েছে।

অথচ বাংলাদেশের দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইনে গত বছরের ২৬ মার্চ ‘চীনে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ২ কোটির বেশি মানুষকে!’ শিরোনামে, সময় টিভির অনলাইন পোর্টাল সময় নিউজ ডটটিভিতে একই দিনে ‘করোনা: চীনে ২ কোটিরও বেশি মানুষের খোঁজ নেই’ শিরোনামে এবং কালেরকণ্ঠ অনলাইনে ‘‘চীনে ২ কোটিরও বেশি মানুষ ‘নিখোঁজ’?’’ শিরোনামে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তিনটি সংবাদমাধ্যমই দুই কোটির বেশি মানুষ নিখোঁজ হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি করছে। কিন্তু কোনো কোম্পানির একটি সিম বিক্রি হওয়া মানেই একজন মানুষ সেটি কিনেছেন এমনটি নিশ্চিত নয়। তা ছাড়া, একটি মোবাইল সিম বন্ধ বা অব্যবহৃত থাকা মানেই সিমের ব্যবহারকারীর মৃত্যু হয়েছে বা নিখোঁজ হয়েছেন- সেটিও নিশ্চিত নয়।

আরও পড়ুন: মস্তিষ্কবিধ্বংসী এই সাত অভ্যাসের কথা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেনি

সময় টিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চীনের একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সাইট দাবি করেছে, দেশটি করোনা নিয়ে মিথ্যা কথা বলছে। ভ্রমণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইনে কেনাকাটার জন্য চীনের নাগরিকদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। এবার চীনে প্রায় দুই কোটি ১৫ লাখ মানুষ এখনো তাদের মোবাইলে রেজিস্ট্রেশন করেননি। চীনের সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ নিয়ে কিছু বলা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, এই দুই কোটি ১৫ লাখ মানুষ কোয়ারেন্টাইনে আছেন অথবা মারা গেছেন। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সাইটের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বিশ্বে করোনার প্রকোপ কম দেখাতে চীনের সেনাবাহিনী হয়তো এই ২ কোটি ১৫ লাখ মানুষকে হত্যা করেও থাকতে পারে।’

চীনে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরুটা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। এরপরের দুই মাসে কেন মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা এতটা কমল, এমন প্রশ্নের জবাবে করপোরেট বিশ্লেষক ক্রিস লেন ব্লুমবার্গকে বলেন, একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে যারা বাড়ি থেকে অনেক দূরে কাজ করতেন এমন অনেকে কর্মস্থলে আর ব্যক্তিগত কাজে আলাদা দুটি মোবাইল সিম ব্যবহার করছেন না।


সর্বশেষ সংবাদ