ঢিলেঢালাভাবে চলছে ভোকেশনাল শিক্ষা চালুর কার্যক্রম
২০২১ সাল থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল শিক্ষা চালুর কথা বলেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকটা সরে আসতে হয়েছে সেই পরিকল্পনা থেকে। এতে পরবর্তীতে অর্থাৎ ২০২২ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অন্তত দুটি করে ট্রেড বা বিষয় চালুর ব্যাপারে আশাবাদী মন্ত্রণালয়। তবে এর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ এখনও দেখা যায় নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ছাড়া দক্ষ জনবল তৈরি হবে না। এ জন্য দলটির সর্বশেষ নির্বাচনী ইশতেহারেও মাধ্যমিক পর্যায়ে ভোকেশনাল শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। এসব কিছু মিলিয়ে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) আলোকে ভোকেশনাল শিক্ষা চালুর এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতেও সাধারণ শিক্ষায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক কোর্স চালুর কথা উল্লেখ আছে।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি ২০১০-এর সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ জানান, ‘সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল কোর্স চালুর বিষয়টি শিক্ষানীতিতে আমরা উল্লেখ করেছি। একটা দেশের উন্নয়নের পেছনে কারিগরি শিক্ষার বিরাট ভূমিকা। সরকারের উচিত হবে দ্রুত এর বাস্তবায়ন করা।’
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবম-দশম শ্রেণিতে অন্তত দুটি ট্রেড বাধ্যতামূলক করতে আমরা কাজ করছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আশা করেছিলাম ২০২১ সাল থেকেই চালু করতে পারব, কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বর্তমান পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী না হলে আশা করছি ২০২২ সাল থেকে সব স্কুল ও মাদরাসায় কারিগরি শিক্ষা চালু হবে।’
দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল শিক্ষা চালু করতে গত বছর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ একাধিক বৈঠক করে বেশ কিছু কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করে। সেখানেই ৬৪০টি প্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল শিক্ষা চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান সম্প্রতি বলেন, ‘চলতি বছর ৬৪০টি স্কুল-মাদরাসায় দুজন করে শিক্ষক বা ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ করে ভোকেশনাল শিক্ষা চালু করা হয়েছে। এভাবে পর্যায়ক্রমে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ভোকেশনাল শিক্ষা চালু হবে। এতে একসময় সাধারণ শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার দূরত্ব কমবে।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের নবম-দশম শ্রেণিতে ভোকেশনাল শিক্ষা চালু করতে গেলে দুজন করে ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর, একজন কম্পিউটার প্রদর্শক এবং একজন ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট/শপ অ্যাসিস্ট্যান্ট/কম্পিউটার ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রয়োজন হবে।
এসব শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিওভুক্তির জন্য সরকারের বছরে ব্যয় হবে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই কারিগরি শিক্ষার জন্য নতুন শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করতে হবে। প্রয়োজন হবে ল্যাবরেটরিসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির।