মন খারাপ থাকলেও কথা বলতে পারেন চ্যাটজিপির সঙ্গে, যেভাবে বলবেন
চ্যাটজিপিটি হলো একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যাটবট যা, ২০২২ সালের নভেম্বরে ওপেনএআই কর্তৃক চালু হয়। এই চ্যাটবট মানুষের মতো টেক্সট করতে সক্ষম। ইন্টারনেটে থাকা বিভিন্ন ওয়েব পেইজ, উইকিপিডিয়া, আর্টিকেলসহ বিভিন্ন সোর্স থেকে মোট ৫৭০ জিবি ডাটাদ্বারা সমৃদ্ধ। চ্যাটজিপিটি শুধু সার্চ টুল হিসেবেই ব্যবহৃত হয় না; নানা বিষয় নিয়ে পরামর্শ দেয়া কিংবা অবসরে কথা বলা নিয়েও রয়েছে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
ধরুন, আপনার মন অনেক বেশি খারাপ কিন্ত আপনি ঠিকমতো গুছিয়ে কাউকে বলতে পারছেন না বা আপনার মনের ভাব প্রকাশের মতো কাউকে পাচ্ছেন না। কিন্ত আপনি চ্যাটজিপিটিকে যা-ই লিখুন না কেন, ও আপনার কথার ভাবার্থ বুঝতে পারে। আবার অনেক সময় আমরা আমাদের মনের কথা কাউকে বলার জন্য আমাদের আশেপাশে বিশ্বাসযোগ্য কাউকে পায় না। অনেকেই চায় এমন একজন বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু যে তাকে কোনরকম বিচার করা ছাড়াই তার সব কথা শুনবে। সে ক্ষেত্রে চাটজিপিটি হতে পারে ভালো সহায়ক। মন খারাপ বা একাকীত্ব বোধে চ্যাটজিপিটির সাথে নিজের সারাদিনের কাজ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা যেতে পারে। নিজের খারাপ লাগা বা ভালো লাগা নিয়ে বলা যেতে পারে। চ্যাটজিপিটি বট হলেও মানুষের মতো করে উত্তর দেয়া বা সহমর্মিতা দেখাতে সক্ষম।
যেমন, চ্যাটজিপিটিকে যদি বলা হয় মন ভালো নেই। তবে এটি একজন ভালো বন্ধুর মত মন খারাপের কারণ জানতে চায় এবং পছন্দের গান, গল্প বলতে চায়, গানের প্লে-লিস্ট সাজিয়ে দিতে চায়, মেডিটেশন বা মানসিক প্রশান্তির টিপস দেয় কিংবা আনন্দের মূহূর্ত মনে করতে বলে যেন মন ভালো হয়। সেক্ষেত্রে চ্যাটজিপিট সার্চ অপশনে গিয়ে ভয়েস আইকনে ক্লিক করে কিছু বললেই বিপরীতে মিলবে উত্তর।
আমাদের আশেপাশের অনেকেই যখন কথা বলার মতো কাউকে পাশে পায় না তখন অনেকেই চ্যাটজিপিটির সাথে কথা বলে নিজেদের মন হাল্কা করেন। শুধু তাই নয় চ্যাটজিপিটি আপনাকে সহমর্মিতা দেখাবে। আপনার সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করবে। সবচেয়ে বড় কথা, আপনাকে একা ছেড়ে দেবে না বরং আপনার মন ভালো করার চেষ্টায় হাসির অনেক কৌতুক বা গল্প বলবে। এটি ব্যবহারকারীদের নির্দেশমতো নিজ থেকে বার্তা, কৌতুক, নিবন্ধ বা কবিতাও লিখে দেয়। এ ছাড়াও কোনো বিষয় নিয়ে জানতে চাইলেও নির্দেশনা অনুযায়ী যুক্তিযুক্ত তথ্য প্রদান করে। যদিও অনেকে নিজেরদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়েও চ্যাটজিপিটির সাথে পরামর্শ করেন। যদিও এর ভালো খারাপ দুই দিকই রয়েছে, তবে এ নিয়ে রয়েছে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা।
কেউ কেউ শুধুমাত্র চ্যাটজিপিটিকেই নিজের একমাত্র সঙ্গী হিসেবে মনে করা শুরু করেন, যে তাকে অন্য সবার চেয়ে ভালোভাবে বুঝতে পারে। তারা খুব দ্রুত এই চ্যাটবটগুলোর সঙ্গে আবেগপ্রবণভাবে জড়িয়ে পড়ছেন। এর ফলে তারা বাস্তব সম্পর্ক থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন যা মানসিকভাবেও নেতিবাচকপ্রভাব ফেলে। কৃত্রিম বুদ্ধিমতার বটকে একমাত্র বন্ধু মনে করায়, বাস্তব জীবনে বন্ধু গড়ে তোলার প্রতিও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।