শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের পরিকল্পনা করছে সরকার: শিক্ষা উপমন্ত্রী
চলতি মাস থেকেই নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওর কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও জাতির প্রয়োজনে শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষা জাতীয়করণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিতে শিক্ষকদের মর্যাদা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শন ছিল শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষকদের মর্যাদা বাড়ানো। সে লক্ষ্যে বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, শিক্ষকরা জাতি গঠনের কারিগর। তাদের ওপরই একটি দেশের ভবিষ্যত নির্ভর করে। তিনি শিক্ষকদের অপরাজনীতি থেকে দুরে থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিএনপি সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দাড়প্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বর্তমান সরকার শিক্ষার উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি শিক্ষকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা বাড়ানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাবান্ধব শেখ হাসিনা সরকার ১৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৩০টি কলেজ, ৩২০টি হাইস্কুল, ৪৫০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করে ইতিহাস গড়েছে।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মশিউর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আবদুস সালাম ও মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর নুরুল ইসলাম। সেমিনার লিখিত প্রবন্ধ উপত্থাপন করেন স্বাশিপ সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর সাজিদুল ইসলাম। সেমিনারে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষকদের মর্যাদা বাড়ানোর জন্য নিন্মোক্ত আট দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে বিদ্যমান সরকারি-বেসরকারি, এমপিও-ননএমপিও বৈষম্য দ্রুততার সঙ্গে নিরসন করে অভিন্ন ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, বর্তমান বাস্তবতা ও স্পর্শকাতরতা দূরীকরণার্থে বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য সরকারি অনুরূপ বাড়ি ভাড়া ও উৎসব ভাতা নিশ্চিত করা, শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল নির্ধারণের দাবি জানানো হয়।
শ্রেণিকক্ষকে আরও আকষণীয়, মনোগ্রাহী করার জন্য শিক্ষকদের আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ নিশ্চিতকরণের দাবি জানান শিক্ষকরা।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটিতে রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগী ও স্বচ্ছ মনের ব্যক্তিদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তকরণ, শিক্ষার যাবতীয় নীতি-নির্ধারণের সব স্তরে শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণেরও দাবি জানানো হয়।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর বৈশ্বিক দক্ষতা সম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরি এবং বিশ্বসমাজ, পারিপাশ্বিক অবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা ও বাস্তব জ্ঞান অর্জনে সমৃদ্ধ টেকসই শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে একটি আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর নতুন ও উদ্যমী প্রজন্ম সৃষ্টির জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করার দাবি জানানো হয়েছে।