‘স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে বই লেখায় জামায়াত-শিবিরের ক্ষোভ ছিল’
জামায়াত-বিএনপি সমর্থকদের হেফাজতে ইসলামে আনার তোড়জোড় চলছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহী। শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘কাউন্সিলের মাধ্যমে আহমদ শফীর হাতে গড়া অরাজনৈতিক কওমী সংগঠনকে পরিকল্পিতভাবে জামায়াত-শিবির, বিএনপির হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
আল্লামা শাহ আহমদ শফীর শ্যালক মো. মঈন উদ্দিন অভিযোগ করেন, ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ফাঁদে পা না দেওয়ায় তখন থেকেই আহমদ শফীকে হত্যার জন্য ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পাতা হয়। তার অভিযোগ, ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফী জামায়াত-শিবিরের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার। স্বাধীনতার পক্ষে থাকায় তার ওপর বহুবার আঘাত এসেছে। তিনি প্রকাশ্যে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য ও বই লেখায় তার প্রতি জামায়াত-শিবিরের ক্ষোভ ছিল দীর্ঘদিনের।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা দিনের মতো পরিষ্কার, জামায়াত-শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য এই কাউন্সিল। তাদের চলাফেরা দেখেই এটা প্রতীয়মান। কিছু সংখ্যক উচ্চাভিলাষী ব্যক্তি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।’
মঈনুদ্দীন রুহী বলেন, ‘আজ যারা কাউন্সিল করছে তাদের কারও কারও ছবি দেখা গেছে তাদের (জামায়াত) সাথে। অনুরোধ করছি, আপনারা মূলধারায় ফিরে আসুন। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। ১৫ নভেম্বরের পর সিনিয়রদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।’ তিনি বলেন, ‘আল্লামা আহমদ শফী হেফাজতের প্রতিষ্ঠাতা। যারা উনার মতাদর্শে থাকবে তারাই আসল হেফাজতে ইসলাম।’
লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী জামায়াত-শিবিরের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার বলে দাবি করে করেন তার ছোট শ্যালক মো. মঈন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফী জামায়াত-শিবিরের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার। স্বাধীনতার পক্ষে থাকায় তার ওপর বহুবার আঘাত এসেছে। তিনি প্রকাশ্যে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য ও বই লেখায় তার প্রতি জামায়াত-শিবিরের ক্ষোভ ছিল দীর্ঘদিনের।’ ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির ফাঁদে পা না দেওয়ায় তখন থেকেই আহমদ শফীকে হত্যার জন্য ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পাতা হয় বলে অভিযোগ তার।
আহমদ শফীর শ্যালক মঈন বলেন, '১৬ সেপ্টেম্বর কিছু ছাত্রকে উসকে দিয়ে মাদ্রাসায় জামায়াত-শিবিরের লেলিয়ে দেওয়া ক্যাডার বাহিনীকে ব্যবহার করে মাদ্রাসাকে অবরুদ্ধ করা হয়। তার ছাত্র ও অত্যন্ত পছন্দের জুনাইদ বাবুনগরী মাদ্রাসায় অবস্থান করে মীর ইদ্রিস, নাছির উদ্দিন মুনীর, মুফতি হারুন ইজাহার, ইনামুল হাসানদের দিয়ে একের পর এক মাদ্রাসার তহবিল লুটতরাজ ও ভাংচুর করে। দুর্বৃত্তরা তার খাস কামরায় প্রবেশ করে ভাংচুর, লুটতরাজ, গালিগালাজ, হুমকি ধমকি ও নির্যাতন চালায়।'
আহমদ শফীকে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, ‘এতে তিনি (আহমদ শফী) ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ অবস্থায় তার অক্সিজেন লাইন বারবার খুলে দেওয়ায় তিনি মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং কোমায় চলে যান। অনেক কষ্ট করে চিকিৎসার জন্য বের করা হলেও রাস্তায় পরিকল্পিতভাবে অ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখে সময়ক্ষেপণ করে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে মঈন বলেন, ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফী আপনাকে মেয়ের মতো মহব্বত করতেন। জামায়াত-শিবিরের যে সকল প্রেতাত্মারা হাটহাজারী মাদ্রাসায় অবস্থান করে তাকে হত্যা করেছে, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে তাদের অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’