০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২২:৫৪

জিয়াউর রহমান জাতীয় সম্পদ, তাকে ব্র্যাকেটে আবদ্ধ করা যাবে না

ইউটিএলের অনলাইন সেমিনার  © সংগৃহীত

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৭ নভেম্বরের সাহসী ভূমিকার কারণেই বাংলাদেশ ভারতীয় আধিপত্যবাদের গ্রাস থেকে রক্ষা পেয়েছিল এমন মত প্রকাশ করেছেন বক্তারা। তাদের মতে, ৭ নভেম্বরের ঘটনাবলীর সঙ্গে ২৪ এর বিপ্লবের সাদৃশ্য রয়েছে। জিয়াউর রহমান কোনো দল বা গোষ্ঠীর সম্পদ নন, তিনি সমগ্র জাতির সম্পদ; তাকে কোনোভাবেই একটি নির্দিষ্ট ব্র্যাকেটের মধ্যে আবদ্ধ করা যাবে না।

আজ রবিবার (৯ নভেম্বর) রাত ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল) আয়োজিত মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে অনলাইন সেমিনারে এ আলোচনা হয়।

প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জোর করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন এ ধারণা সত্য নয়। ভারতের প্রত্যক্ষ প্রভাবের সঙ্গে যুক্ত খালেদ মোশাররফ যখন তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন, তখন সিপাহি-জনতা তাকে মুক্ত করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব তার হাতে তুলে দেন। জিয়াউর রহমান যদি সে সময়ে নেতৃত্ব গ্রহণ না করতেন, তাহলে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল তার রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় এবং স্বাধীনতার ঘোষণা। এর পাশাপাশি তিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। ৭ নভেম্বর আমাদের যে জাতীয় পরিচয় ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার বার্তা দিয়েছে তা অক্ষুণ্ণ রাখা আমাদের দায়িত্ব। শহীদ রাষ্ট্রপতি কোনো দলের সম্পদ নন; তিনি পুরো জাতির ঐতিহাসিক নেতৃত্বের প্রতীক। তাকে কোনো সংকীর্ণ পরিধিতে আবদ্ধ করা যাবে না।

আলোচক হিসেবে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ও ইউটিএল চবি চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারী।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব গুরুতর হুমকির মুখে পড়ে। এ সময় সিপাহি-জনতা দেশ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করে। ঠিক একইভাবে ২৪ সালের ৫ আগস্টেও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এবং জনগণ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। তাদের প্রতি আমাদের চিরকৃতজ্ঞতা।

সেমিনারের প্রধান অতিথি, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন বলেন, একাত্তর পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিব আমাদের জাতীয় প্রত্যাশার বিপরীতে দেশকে ভারতীয় আধিপত্যের দিকে ধাবিত করেছিলেন। সেখান থেকে জিয়াউর রহমান সাহসী ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে টিকিয়ে রাখেন। গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জেনারেশন জেড এর সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা যে নতুনভাবে স্বাধীনতার স্বাদ পেলাম তারাও আমাদের কৃতজ্ঞতার দাবিদার।

ইউটিএল এর সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইনের সঞ্চালনায় সভাপতির বক্তব্যে ইউটিএল এর আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আতাউর রহমান বিশ্বাস বলেন, ২৫ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর যেমন জাতীয় ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনি ৭ নভেম্বরও একটি ঐতিহাসিক দিন। কিন্তু গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী সরকার এ দিনটিকে জনস্মৃতি থেকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আমাদের ইতিহাস যদি সঠিকভাবে বর্তমান প্রজন্ম জানতে পারে, যদি ইতিহাসের প্রকৃত নায়কদের চিনতে পারে তাহলে এই জাতি কখনো পথ হারাবে না ইনশাআল্লাহ। 

সেমিনারে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।