২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৩৬

‘আমাকে কুকুরের মত টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায় পুলিশ, জানি না কীভাবে ছাত্রদের সামনে দাঁড়াব’

শিক্ষককে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ   © ফাইল ফটো

২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়াসহ তিন দাবিতে ৯ দিন ধরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষকরা। আজ সোমবারও (২০ অক্টোবর) শহীদ মিনারে অন্তত ১০ হাজার শিক্ষক অবস্থান নিয়েছেন।

পাবনার সাথিয়া থেকে এ অবস্থান কর্মসূচিতে ছুটে এসেছেন চিনানাড়ী অ্যান্ড বিলকলমি দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (কৃষি) মো. ইউসুফ আলী। ৮ দিন ধরে খোলা আকাশের নীচে অবস্থান নেওয়া এই শিক্ষক গত ১২ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশী নির্যাতনের শিকার হন।

মো. ইউসুফ আলী জানান, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি আদায়ে পাবনা থেকে ছুটে আসেন তিনি। গত ১২ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে লক্ষাধিক শিক্ষকের সঙ্গে অবস্থান নেন তিনি। এ সময় অতর্কিত আক্রমণ চালায় পুলিশ। টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার পর হাতকড়া পরিয়ে আটক করা হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষক মো. ইউসুফ আলী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পূর্বঘোষিত লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে ১২ তারিখে প্রেস ক্লাবে অবস্থান নিই। দুপুর ১টার দিকে প্রশাসনের তরফ থেকে আমাদের ৫ মিনিটের মধ্যে অবস্থান ত্যাগ করতে বলা হয়। কিন্তু লক্ষাধিক শিক্ষকের উপস্থিতির কারণে আমরা অবস্থান ত্যাগ করতে পারিনি। এ সময় পৈশাচিক কায়দায় আমাদের উপর আক্রমণ করা হয়। ফ্যাসিবাদী আমলের মত আবারও আমাদের উপর টিয়ারশেল মারা হয়, লাঠিচার্জ করা হয়।

তিনি বলেন, আমাকে কুকুরের মত টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি নানা অনুনয়-বিনয় করলেও আমাকে ছাড়া হয়নি। সেখানে আমাকে হ্যান্ডকাফ পরানো হয়। তারা বারবার জানতে চায় দলীয় প্রোগ্রামে এসেছি কিনা। অথচ আমি শুধু শিক্ষকের আহ্বানে এসেছি। আমি জানি না কিভাবে আমি আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াব।

মো. ইউসুফ আলী বলেন, আমাদের দাবি তিনটি। ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং, ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা দিতে হবে। সামান্য এ তিনটি দাবিতে আমি খোলা আকাশের নিচে ৮ দিন শুয়ে আছি। নবম দিনেও কোনো উপদেষ্টা এসে আমাদের সহানুভূতি জানালেন না। ৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার ঘোষণা দিয়েছে, এটি প্রহসন ছাড়া কিছু নয়।

বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারূ ফোরামের নির্বাহী সাংগঠনিক সম্পাদক ও মুগদাপাড়া কাজী জাফর আহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ব্যবসায় শিক্ষা) এস এম ফরিদ উদ্দীন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সরকার যদি দ্রুত দাবি পূরণ না করে, তাহলে আমাদের পরবর্তী শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও আমরা কোনো দায়িত্ব পালন করব না। তবে আমরা দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যেতে চাই। এজন্য দ্রুত প্রজ্ঞাপন দিতে হবে। যা ক্ষতি হচ্ছে, এটি সরকারের অনাগ্রহের কারণে, এটা আমাদের দায় না।

তিনি বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টার প্রত্যক্ষ পরামর্শে আমরা ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবি জানিয়েছি। আমরা ২০ শতাংশের হিসাব দেওয়ার পরে তিনি আমাদের ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। এখন দাবি মেনে নিতে গড়িমসি করছেন। অথচ উপদেষ্টা পরিষদে বেশ কয়েকজন শিক্ষক রয়েছেন।