শিক্ষকদের যমুনা অভিমুখে ‘লং মার্চ’ কবে?
মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার দাবিতে টানা সাতদিন ধরে আন্দোলন করছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। দফায় দফায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হলেও দাবি আদায় হয়নি। এ অবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করার ঘোষণাও দিয়েছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। তবে সেই ঘোষণা থেকে সরে এসে অনশনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন তারা। প্রয়োজন হলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখেও লং মার্চ করবেন তারা। তবে সেটি কবে?
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন গোয়েন্দ সংস্থার প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, যমুনা অভিমুখে লং মার্চ করলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের দলে ভিড়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে পারেন। এর ফলে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে। যার কারণে আপাতত যমুনা অভিমুখে লং মার্চ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে না।
তাদের মতে, কূটনৈতিক তৎপড়তা, রাজনৈতিক দলের চাপ এবং তাদের অনশন ও অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমেই তারা দাবি আদায় করে নিতে চান। শিক্ষকদের ক্ষতি হয়, এমন কোনো কর্মসূচিতে আপাতত যেতে চাচ্ছেন না তারা। তবে প্রয়োজন হলে একদম শেষ ধাপ হিসেবে যমুনা অভিমুখে লং মার্চ করবেন তারা।
এ বিষয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজীজি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘যমুনা অভিমুখে লং মার্চ করলে আমার শিক্ষকদের ওপর হামলা হতে পারে। সেজন্য আমরা এ কর্মসূচিতে যাচ্ছি না। প্রয়োজন হলে আমরা এ কর্মসূচি দিতেও বাধ্য হব।’
বাড়িভাড়া বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে এবার আন্দোলনরত শিক্ষকরা রাজধানীতে থালা-বাটি হাতে রাস্তায় নামার ঘোষণা দিয়েছেন। আগামীকাল রবিবার (১৯ অক্টোবর) শহীদ মিনার থেকে থালা-বাটি নিয়ে শিক্ষা ভবনের দিকে ভুখা মিছিল করবেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
চলমান শিক্ষক ও কর্মচারীদের আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজীজি বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ভুখা মিছিল বের হবে। ইতোমধ্যেই আমাদের ১০০ জন শিক্ষক অনশন কর্মসূচি পালন করছেন, বাকিরা অবস্থান কর্মসূচি করছেন।’
ভুখা মিছিল হলো এমন এক প্রতিবাদ কর্মসূচি, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা ক্ষুধার্ত অবস্থায় রাস্তায় মিছিল করে নিজেদের দাবি ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাধারণত খাদ্য সংকট, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুরবস্থা, ন্যায্য মজুরি না পাওয়া বা সরকারের অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে এই ধরনের মিছিল আয়োজন করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা প্রতীকীভাবে না খেয়ে থাকেন, যাতে সমাজ ও রাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।
শিক্ষক নেতা দেলাওয়ার হোসেন আজীজি আরও বলেন, ‘২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া মানে ২০; ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা; এখানে ১৫০০ মানে ১৫০০। এখানে কমানোর কোনো সুযোগ নেই। যতক্ষণ দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ সারা দেশের শিক্ষকরা রাজপথ ছাড়বেন না। প্রয়োজনে আমরা রক্ত দেব, তবু দাবি আদায় করে ছাড়ব।’