ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে রাবির জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের অবস্থান কর্মসূচি
দেশব্যাপী ছাত্র হত্যা, নিপীড়ন ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপিপন্থী সংগঠন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল হক বলেন, আজ বিবেকের তাড়নায় আমাদের রাস্তায় নামতে হয়েছে৷ এখন আমাদের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেওয়ার কথা কিন্তু এখন শিক্ষার্থীদের রক্তের দাম নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। স্বাধীনতার এত বছর পর ২০২৪ সালে যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আমার সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীরা রক্ত দিয়েছে যার প্রতিবাদে আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী বাংলাদেশ সরকার৷ এ হত্যার দায় সরকারকেই নিতে হবে৷ আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবিকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে রাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম সবসময় থাকবে।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আমীরুল ইসলাম ইসলামের সঞ্চালনায় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুনুর রশীদ বলেন, এই সরকার সেনাবাহিনীকে নামিয়ে শিশু থেকে সাধারণ জনতা এবং ছাত্র-ছাত্রীদেরকে হত্যা করছে। যা বহির্বিশ্বে 'গণহত্যা' নামে পরিচিতি পেয়েছে। সরকার দিনদিন মিথ্যা কথা বলে এই সরকারকে দমিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। এই জেনারেশন দমাবার নয়। দাবিয়ে রাখতে পারবেন না। তারা ন্যায় সঙ্গত এবং যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য মাঠে নেমেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হলে গিয়ে তার ছাত্রদের রুম পরিদর্শন করছে। আপনারা দেখেননি এই ছাত্রদের রুমে কী পাওয়া গেছে? এই প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। মানুষ আজ দুঃসহ অসহায়। এই জেনারেল দাবি আদায় করে ছাড়বে। যারা ন্যায়, মুখের ভাষা কেড়ে নিয়েছে তাদের পদত্যাগ চাই।
মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এনামুল হক বলেন, আমরা এতদিন চুপ ছিলাম কিন্তু এখন মৌনতা ভেঙে মাঠে নামতে হয়েছে আমাদের। ডামি সরকার প্রধানের অপবিত্র হাত ছাত্রদের পবিত্র রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। এই দেশ কাশ্মীর বা ফিলিস্তিন নয় যে এখানে বিমান বাহিনী, নৌ-বাহিনী, স্থল-বাহিনী দিয়ে গুলি করে শিক্ষার্থীদের রক্তকে কলুষিত করছেন। নির্বিচারে গ্রেফতার করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছেন। একটি গণতান্ত্রিক দেশে এটি কোনোভাবেই কাম্য না। এরপর যদি কোনো ছাত্রের গায়ে গুলি চলে তাহলে সকল পেশাজীবী মানুষ মাঠে নামবে। সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনি দ্রুত সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করে মানুষকে মুক্তি দিন। না হলে আপনাকে নামানোর জন্য শিক্ষকসহ সব পেশার নেতাকর্মীরা ছাত্রদের সাথে মাঠে নামতে বাধ্য হবে।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলিমের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন আইবিএ অধ্যাপক ড. হাসানাত আলি, ড. মো. কুদরত-ই-জাহান, আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ।