শিক্ষক বৈষম্য দূর করতে জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের দাবি
২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকারের করা শিক্ষানীতিকে ‘‘একটি অসাধারণ শিক্ষা দর্শন’’ উল্লেখ করে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন হলে যে শিক্ষকরা বার্ষিক পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছেন না এবং বৈশাখী ভাতা যারা পাচ্ছি না, তাদের বৈষম্য দূর হবে। শিক্ষানীতির দর্শন বাস্তবায়ন করা হলে শিক্ষকদের অপ্রাপ্তি ও বৈষম্য দূর হবে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় শিক্ষক দিবসে বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়নের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় ঢাবি উপাচার্য এসব কথা বলেন।
এর পাশাপাশি শিক্ষাখাতে ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী বরাদ্দ রাখারও দাবি জানান অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি হল- আমাদের জিডিপির শতকরা ছয় ভাগ এবং জাতীয় বাজেটের শতকরা ২০ ভাগ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দিতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে এটি নেই। বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে জিডিপির দুই শতাংশর চেয়ে একটু বেশি এবং জাতীয় বাজেটের মাত্র ১১ থেকে ১৩ শতাংশে উঠানামা করে।
তিনি আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩-৭৪ সালেই বলেছিলেন শিক্ষাখাতে জিডিপির কমপক্ষে চার শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে। এটি ছিল বঙ্গবন্ধুর দর্শন। জাতির জনক ১৯৭৩ সালে যে চিন্তা করেছেন ইউনেস্কো সেটি করেছে ১৯৯৬ সালে।
শিক্ষাখাতে বরাদ্দকে ‘বিনিয়োগ’ হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, এ কথা প্রধানমন্ত্রীও বলে থাকেন। এই সরকারের পক্ষেই শিক্ষানীতির বাস্তবায়ন সম্ভব। যে সরকার শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে সেই সরকারই পারে আমাদের শিক্ষকদের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ করতে।
সভার প্রধান আলোচক নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক অহিদুজ্জামান বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্রমান্বয়ে শিক্ষকদের মর্যাদাহানি হতে থাকে। পরবর্তীতে দেশের উন্নয়ন যেভাবে এগিয়েছে সেভাবে শিক্ষকদের মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা এগোয়নি।বর্তমানে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাখাতের উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে গেলেও আমলাতান্ত্রিক ‘বাধার’ কারণে অনেক উদ্যোগ আটকে আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শিক্ষক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আবুল বাশার হাওলাদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের মহাসচিব মো. জসিম উদ্দিন শিকদার।
প্রসঙ্গত, শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত হয়।