সর্বজনীন পেনশন প্রত্যাখ্যান মাভাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় প্রদত্ত সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাহারে দৃঢ় অবস্থান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি। সোমবার (২৫ মার্চ) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ.এস.এম সাইফুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মাসুদার রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৩ মার্চ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় পেনশন সংক্রান্ত একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন জারি করে (এস, আর, ও নং-৪৭-আইন/২০২৪) যেখানে বলা হয়েছে ‘সকল স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং উহাদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহের চাকরিতে যে সকল কর্মকর্তা বা কর্মচারী, তাহারা যে নামেই অভিহিত হউন না কেন, ১ জুলাই, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ তারিখ ও তৎপরবর্তী সময়ে নতুন যোগদান করিবেন, তাহাদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করিল। এমন একটি বৈষম্যমূলক ও দুরভিসন্ধিমূলক প্রজ্ঞাপন জারির ফলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ, হতাশা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে।’
সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করে বিবৃতিতে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, উক্ত প্রজ্ঞাপনটি কার্যকর হলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগন চরম বৈষম্যের শিকার হবেন। একই বেতন স্কেলের আওতাধীন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে শিক্ষা ও গবেষণাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছিলেন এবং শিক্ষকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন। এই প্রজ্ঞাপন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষাদর্শনের প্রতি চরম অবমাননা প্রদর্শন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ.এস.এম সাইফুল্লাহ বলেন, প্রজাতন্ত্রের অন্য সকল কর্মচারীদের প্রচলিত পেনশন সুবিধার আওতায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশনের আওতাভুক্ত করা একটি মর্যাদাহানিকর, দুরভিসন্ধিমূলক হঠকারী সিদ্ধান্ত। একটি মহল সবসময় শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে যেমন অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় তেমনি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রচলিত পেনশন সুবিধা বহাল এবং সাথে শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের জোর দাবী জানাচ্ছি।
সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মাসুদার রহমান বলেন, এ ধরনের বৈষম্যমুলক নীতি মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আসতে নিরুৎসাহিত করবে। মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত দেশ গড়ার যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন পুরন বাধাগ্রস্ত হবে।