হাবিপ্রবি গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ নির্বাচনে দুই প্যানেলে ২০ প্রার্থী
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ মার্চ। নির্বাচন আয়োজন উপলক্ষে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তফশিল ঘোষণা করেছে কমিশন। তফশিল ঘোষণার পরই নির্বাচনে অংশ নিতে শুরু হয় প্রার্থীদের প্রস্তুতি।
জানা যায়, এবারের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ দুটি প্যানেল। অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সংগঠনের বিগত কমিটির সভাপতি ড. ফাহিমা খানম এবং ফসল শারীরতত্ত্ব ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. শ্রীপতি সিকদারের নেতৃত্বে ‘ফাহিমা-শ্রীপতি প্যানেল’।
অন্যদিকে অর্থনীতি বিভাগের আরেক অধ্যাপক ও সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. রোজিনা ইয়াসমিন লাকির নেতৃত্বে ‘নীল প্যানেল’ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
নির্বাচন কমিশনার সহকারী অধ্যাপক রুবায়েত আল ফেরদৌস নোমান বলেন, আগামী ১০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম-২ এ দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ওইদিনই ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে ভ্রাতৃপ্রতিম অন্যান্য সংগঠনকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আমন্ত্রণ জানাবো।
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, গঠনতন্ত্র মোতাবেক কমিটির কার্যকালের মেয়াদ শেষের আগেই নির্বাচন দিতে হয়। কিন্তু অধ্যাপক ফাহিমা খানম ও অধ্যাপক রোজিনা ইয়াসমিন (লাকী) নেতৃত্বাধীন কমিটি মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও পরবর্তী নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়। ফলে একটি সাধারণ সভার মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচন আয়োজনের জন্য অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজকে আহ্বায়ক ও অধ্যাপক ড. শ্রীপতি সিকদারকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট এডহক কমিটি গঠন করা হয়।
সেই এডহক কমিটি একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে। নির্বাচন কমিশনে কমিশনার হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দীন, সহকারী অধ্যাপক রুবায়েত আল ফেরদৌস নোমান এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক মেহেদী ইসলাম।
জানা যায়, এডহক কমিটি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় না গিয়ে সমঝোতা ও আলাপ আলোচনার মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে চায়। এতে নির্বাচন ছাড়া সভাপতি পদে অধ্যাপক ফাহিমা খানম ও সাধারণ সম্পাদক পদে অধ্যাপক ড. শ্রীপতি সিকদারকে রেখে অধ্যাপক ড. রোজিনা ইয়াসমিনকে সহ-সভাপতি অথবা যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ প্রস্তাব করে।
সংগঠনের সদস্য ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপকের মাধ্যমে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। পরে তাদের মাঝে আলোচনার ফলাফল জানাতে বলা হয়। কিন্তু সেই সহযোগী অধ্যাপক পরবর্তীতে এডহক কমিটিকে তাদের সিদ্ধান্ত না জানিয়ে পৃথকভাবে ‘নীল প্যানেল’ প্রকাশ করে।
সংগঠনের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংগঠনে গণতান্ত্রিক চর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংগঠনে অনেক সিনিয়র অধ্যাপক আছেন। তারা পদে আসতে চান। বর্তমানে যারা আছেন তাদের মধ্যে থেকে সভাপতি ও সহ-সভাপতিতে ৩টি পদ নিয়ে আপত্তি না থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদে বনিবনা না হওয়ায় দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পরবর্তীতে এটি থেকেই আলাদা প্যানেলের যাত্রা।
নীল প্যানেল মনোনীত সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী অধ্যাপক ড. রোজিনা ইয়াসমিন বলেন, জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। ফলাফল যাই আসুক মেনে নিয়ে কাজ করতে চাই।
ফাহিমা-শ্রীপতি প্যানেল মনোনীত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শ্রীপতি শিকদার বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ও আদর্শকে সামনে রেখেই আমরা পথ চলতে চাই। বিষয়টা যেহেতু এখন নির্বাচন পর্যায়ে চলে গেছে, আমরা এর জন্য প্রস্তুত। আশাকরি বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমরা জয়যুক্ত হবো।
এবারের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচনে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০ জন, অন্যান্য পদে ৯ জন ও স্বতন্ত্র পদে ১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্যদিকে সভাপতি ও সহ-সভাপতির মোট ৪টি পদে নেই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী। সংগঠনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৬২ জন।