সম্মানী না নিয়েই ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত চবি শিক্ষকদের
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভর্তি পরীক্ষা শুরুর বাকি তিনদিন। তবে ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করলেও সম্মানী (ভাতা) না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ভর্তি ফরম বিক্রির টাকা কোন খাতে ব্যয় হয় প্রশাসন থেকে এর যথাযথ ব্যাখ্যা না পাওয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত অব্যাহত থাকবে।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমিতির এক সাধারণ সভায় শিক্ষকেরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষকেরা পরিদর্শক, প্রধান পরিদর্শক ও সমন্বয়কারী—এই চার ক্যাটাগরিতে দায়িত্ব পালন করেন। প্রতি শিফটের পরীক্ষায় শিক্ষকেরা সম্মানী পান ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা। একজন শিক্ষক পুরো ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর মোট সম্মানী পান প্রায় ১৯ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকা। এ সম্মানী পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন অনেক শিক্ষক।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভর্তি পরীক্ষার আয় ব্যয়ের হিসাবে অস্বচ্ছতা ও অসঙ্গতিকে কেন্দ্র করে জাতীয় সংসদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ কর্তৃক ভর্তি পরীক্ষার নামে আয়কৃত বিপুল অর্থ ভাগবাটোয়ারা করা হচ্ছে বলে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির জরুরি সাধারণ সভায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি সিদ্ধান্ত হলো শিক্ষকদের সম্মানী। ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় আয় ও ব্যয়ের একটি স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন বিবরণী না আসা পর্যন্ত শিক্ষকগণ জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ভর্তি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালন করে সহযোগিতা করলেও কোন সম্মানী গ্রহণ করবেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের একটি পরিস্থিতিতে উল্লিখিত সমস্যার একটি সন্তোষজনক সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনকালে সম্মানিত শিক্ষকগণকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সম্মানী প্রদান করার কথা নয়। যদি দেওয়া হয়, তাহলে শিক্ষক সমিতি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এর করণীয় সম্পর্কে জানাবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২ মার্চ থেকে যা চলবে ১৬ মার্চ পর্যন্ত। প্রতি বছরের মতো এ বছরও চারটি ইউনিট ও দুটি উপ-ইউনিটে পরীক্ষা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসন রয়েছে ৪ হাজার ৯২৬টি। এর মধ্যে সাধারণ আসন ৪ হাজার ১৮৯টি। আর বাকি ৭৩৭টি আসন কোটায় বরাদ্দ থাকবে। এ বছর মোট পরীক্ষায় বসবেন ২ লাখ ৪৩ হাজার ৫৫৫ শিক্ষার্থী।