জাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে। আজ রবিবার (২৮ জানুয়ারি) উপাচার্যবিরোধী আওয়ামী লীগপন্থী ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ এ অভিযোগ করেন।
শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নির্বাহী সদস্য প্রার্থী ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রায়হান শরীফ অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী উভয় পরিষদের শিক্ষকদের মাঝে বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। তবে প্রশাসন গতবারের ন্যায় এবারও নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের প্লাটফর্ম ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের প্যানেল পরিচিতি সভায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতি উপাচার্যের পক্ষপাতদুষ্ট কর্ম তৎপরতার প্রমাণ। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে যে উপাচার্য নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে সাধারণ শিক্ষকদের ফোন করেন উপাচার্যপন্থী প্যানেলের স্বপক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য। বিষয়টি অনভিপ্রেত।
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতা অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন। এখানে অনেক সময় উপাচার্যের সাথে দর কষাকষি করে শিক্ষকদের পক্ষ নিতে হয়। ফলত এক্ষেত্রে উপাচার্যের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়। আমি বিশ্বাস করি প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ এটা আমলে নেবেন না এবং তাদের স্বার্থে যোগ্যপ্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সরাসরি দলীয় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া সংবলিত এক অধ্যাপকের ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক লুতফুল এলাহী লেখেন, সবার জন্য শুভ কামনা রইলো। তবে দলীয় নির্বাচনী প্রচারণায় উপাচার্য মহোদয়সহ প্রশাসনের কর্ণধারদের সরাসরি অংশগ্রহণ করার রেওয়াজটা ভবিষ্যতে বন্ধ হওয়া জরুরি।
শিক্ষকদের প্রভাবিত করার বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, এ সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি নির্বাচন প্রভাবিত করার জন্য কোন শিক্ষককে ফোন করিনি আর এটা নিয়মের মধ্যেও পরে না। তবে যারা আমার সহকর্মী শুধু তাদের সাথে অফিসিয়াল বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে, এতে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোন বিষয় ছিল না।
উল্লেখ্য, আগামীকাল সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ক্লাবে সকাল ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলবে। এতে আওয়ামী লীগের উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের প্লাটফর্ম ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’ এবং আওয়ামী লীগের উপাচার্যবিরোধী ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের প্লাটফর্ম ‘শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’ ভিন্ন ভিন্ন প্যানেল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
এর আগে, গত ১৮ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক অনিরুদ্ধ কাহালি স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বৈধ প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়।