শিক্ষকদের উঠিয়ে ছাত্রলীগকে বসানোর ঘটনায় বিব্রত জাবি শিক্ষক সমিতি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ছয়টি হল ও একটি গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুইজন শিক্ষককে আসন থেকে উঠিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের বসানোর ঘটনায় বিব্রত হয়েছেন শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। বুধবার (১৫ নভেম্বর) বিকালে জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এম শামীম কায়সার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বিব্রত হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিনেট সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদমর্যাদার শিক্ষকমন্ডলীর আসন নির্ধারিত না থাকায় যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তৈরি হয়েছে, তার জন্য জাবি শিক্ষক সমিতি বিব্রত। শিক্ষক সমিতি আশা করে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ধরণের গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনে অনেক বেশি যত্নবান হবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট হবেন।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাবির সাতটি স্থাপনার উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে অনুষ্ঠান শুরুর ২৪ মিনিট পর প্রায় ২০জন নেতাকর্মী নিয়ে জহির রায়হান মিলনায়তনে উপস্থিত হন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন। ততক্ষণে অডিটোরিয়াম ভবন অতিথি দিয়ে ভরে যায়। তখন পরিপূর্ণ হলরুমে জায়গা না পাওয়ায় ক্ষেপে যান লিটন।
এ সময় তাদের শান্ত করতে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান উপস্থিত হন। পরে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বাংলা বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী শেখ শাহরিয়ার ইসলাম আকাশ অনুষ্ঠান চলাকালে অডিটোরিয়াম ভবনে তালা দেওয়ার হুমকি দেন।
পরবর্তীতে তৃতীয় সারিতে বসা প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও দর্শন বিভাগের দুই প্রভাষককে তাদের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান। পরে শিক্ষকদের যথাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম সারির আসনে বসানো হয়। শিক্ষকদের সেই আসনে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনকে বসানো হয়। ফলে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগেই ওই দুই শিক্ষককে অডিটোরিয়াম ত্যাগ করতে দেখা যায়।
এদিকে শিক্ষক সমিতির দেওয়া বিবৃতিতে ভুল তারিখ পরিলক্ষিত হয়েছে। ঘটনাটি ১৪ নভেম্বর ঘটলেও শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে দেখা যায়, ১০ নভেম্বর তারিখে স্বাক্ষর করা।
এ বিষয়ে জাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এম শামীম কায়সার বলেন, ' যেখানে সিনিয়র অধ্যাপকরা দাড়িয়ে ছিলেন। সে জায়গায় শিক্ষকদের উঠিয়ে দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের বসতে দেওয়ার ঘটনা আমাদের বিব্রতবোধ করেছে। আমরা আগামীকাল উপাচার্যের সাথে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও অনুষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলবো। এছাড়া বিবৃতিতে তারিখ ভুলটি ছিলো অনাকাঙ্ক্ষিত ও আমরা এটি সংশোধন করছি।